হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফির মৃত্যু রহস্য উন্মোচনে পুলিশের বিশেষ ইউনিট-পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ১৫ জনের জবানবন্দি নিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) সকালে হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসায় গিয়ে তারা এ জবানবন্দি নেন।
সকালে পিবিআইয়ের একটি বিশাল টিম প্রবেশ করে হাটহাজারীর মইনুল ইসলাম দারুল উলুম মাদ্রাসায়। দু’জন পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত অন্তত ১৫ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়। হেফাজতের বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরীরও জবানবন্দি নেন তারা।
এ সময় নিরাপত্তায় মাদ্রাসাজুড়ে ছিল পুলিশের কড়া নিরাপত্তা। পিবিআইয়ের তদন্ত টিমের সদস্যরা হাটহাজারী মাদ্রাসায় আল্লামা শফির কক্ষে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেন। এরপর তদন্ত দল ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদ্রাসায় গিয়ে অনুসন্ধান করে।
গত ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার সাবেক প্রধান পরিচালক আহমদ শফিকে হত্যার অভিযোগে ৩৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়। আহমদ শফি মারা যাওয়ার প্রায় তিন মাস পর দায়ের করা এ মামলায় তাকে ‘মানসিক নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে’ হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে। আহমদ শফির শ্যালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এই মামলা দায়ের করেন। ১০টি ধারায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় মূল আসামি করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের চার নম্বর যুগ্ম মহাসচিব নাছির উদ্দিন মুনিরকে। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে হেফাজতে ইসলামের দুই নম্বর যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হককে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর সমর্থক।
পিবিআইকে এক মাসের মধ্যে এই মামলার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার আরজিতে ১৭ সেপ্টেম্বর অসুস্থ অবস্থায় আল্লামা আহমদ শফি হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে আসার সময় তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আটকে দিয়ে অক্সিজেন পাইপ খুলে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। এ অভিযোগের সত্যতা যাছাইয়ের জন্য পিবিআই আজ হাটহাজারী মাদ্রাসায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জবানবন্দি নেন।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১০৪ বছর বয়সী আল্লামা শফি।