নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১ ডিসেম্বর, ২০২০ ৪:০৫ : অপরাহ্ণ
আজিজুর রহমান আজিজ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি কোনো দলীয় পদে নেই। কিন্তু দলীয় পদে না থেকেও তার রয়েছে কর্মীর বহর! চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের বড় কর্মসূচিতে পদবিহীন এ নেতার হাজারো কর্মী বাহিনীর বর্ণাঢ্য মিছিল সবার নজর কাড়ে।
চট্টগ্রামে রাজপথ কাঁপানো অনেক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রয়েছেন। যাদের অনেকে এখন কর্মী হারা। আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে তারা একা অংশ নেন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজিজ একা নয়, বিশাল মিছিল নিয়ে উৎসবের আমেজে যোগ দেন দলীয় কর্মসূচিতে।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) নগরীর রেলওয়ে স্টেশনে যুবলীগের একটি কর্মসূচিতেও বর্ণাঢ্য মিছিল নিয়ে যোগ দেন তিনি।
আজিজ জানান, ১৯৯৭ সালে তিনি নগরীর ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পদার্পণ করে ২০০২ সালে কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৪ সালে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৩ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন।
৩৯ বছর বয়সী আজিজ থাকেন নগরীর হালিশহর বড়পোল এলাকায়। তিনি হালিশহরে থাকলেও নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে তার কর্মী রয়েছে বলে জানিয়েছেন।
কর্মীর সংখ্যা কত হতে পারে জানতে চাইলে আজিজুর রহমান রাজনীতি সংবাদকে বলেন, আনুমানিক ৫ হাজার তো হবেই।
নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে রাজনীতির মাঠে সরব ছিলেন আজিজ।
আজিজের কথায়-‘লালদীঘি মাঠে আমার মিছিলের জন্য অপেক্ষায় থাকতেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। মঞ্চ থেকে তিনি আমাকে ফোন করে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলতেন, ‘আজিজ তাড়াতাড়ি আয়, মাঠ হালি (আজিজ তাড়াতাড়ি আসো, মাঠ খালি)।’ আমি মিছিল নিয়ে যাওয়ার পর লালদীঘি মাঠ ভর্তি হয়ে যেতো।’
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে আপনার বর্ণাঢ্য মিছিলের ক্যারিশমা কী ?
উত্তরে আজিজ বললেন, এটা হলো আমার প্রতি কর্মীদের ভালোবাসা। ফোনে বলা মাত্রই মুহূর্তের মধ্যে আমার কর্মীরা স্পটে চলে আসেন। তারা আমার সাথে আনন্দ-উদ্দীপনায় মিছিলে অংশ নেন।
সাবেক হয়েও গত পাঁচ বছর ধরে কর্মীদের কীভাবে আগলে রেখেছেন ?
জবাবে আজিজ বলেন, আমি সাবেক হওয়ার পরও কর্মীদের থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি। নিয়মিত যোগাযোগ রাখি। নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে দলীয় ও সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে থাকি । কর্মীরা যেকোনাে সময়ে আমাকে কাছে পায়। তাই কর্মীরাও আমার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি।
রাজনীতির শুরুতে আপনার প্রতি কর্মীদের কীভাবে আকৃষ্ট করেছেন ?
উত্তরে আজিজ বলেন, আমি কলেজে পড়ার সময় ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কথা বলতাম। ছাত্ররাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার পর ছাত্রদের কোনো সমস্যা হলে সমাধানের চেষ্টা করতাম। এতে আমি ছাত্রদের মন জয় করি। ছাত্রদের মন জয় করে আমি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি হয়েছি। এরপর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদও অর্জন করি।
পদবীহীন থেকেও মাঠে সক্রিয় থাকার বিষয়ে আজিজ বলেন, কাজ করতে যে পদ লাগবে সেই ধারণাটা ভুল। পদে না থেকেও কাজ করা যায়। আমি জনপ্রতিনিধি না হয়েও করোনাকালীন সময়ে সমাজের অসহায় মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি।
নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী তার অভিভাবক ছিলেন জানিয়ে আজিজ বলেন, তিনি আমাকে খুব স্নেহ করতেন। তিনি আমাকে নগর ছাত্রলীগের সভাপতির প্রস্তাব করে কেন্দ্রে তালিকা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। আমার বিয়ের পাত্রীও ঠিক করেছেন মহিউদ্দিন ভাই। তিনি আমার বিয়ের সবকটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় রাজনীতিতে আজকে আমার এই অবস্থান।
বর্তমানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সাথে রাজনীতির মাঠে সরব আজিজুর রহমান আজিজ জানালেন, আগামীতে যুবলীগ কিংবা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাথে তিনি সম্পৃক্ত হবেন।
আরও পড়ুন: নন্দিত রনি, নিন্দিত রনি!