রোমানিয়ায় করোনাভাইরাস রোগীদের একটি হাসপাতালে আগুন লেগে কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় পিয়াত্রা নিয়ামস কাউন্টি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে বলে দেশটির জরুরি পরিস্থিতি সংস্থা জানিয়েছে। আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র সংলগ্ন আরেকটি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। আইসিইউতে কী করে আগুন লাগল, তা জানা যায়নি। অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা।
দেশটির জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক সংস্থা আইএসইউ সূত্রে খবর, ভয়ংকর আগুন আরও সাত জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। একজন চিকিৎসক ছাড়া বাকিরা করোনা আক্রান্ত। এই সাত জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, তাঁরা অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্ত করে দেখবেন।
রোমানিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নেলু তাতারু সংবাদ সংস্থাকে জানান, অগ্নিদগ্ধ ছয় রোগীকে চিকিৎসার জন্য পূর্ব রোমানিয়ার ইয়াসি শহরের কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আইসিইউয়ে দুর্ঘটনার সময় সেখানে যে চিকিৎসক রোগী দেখছিলেন, তাঁর শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। ওই চিকিৎসককে রাজধানী বুখারেস্টের এক হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এই দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে রোমানিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যমন্ত্রকই সরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় আইন পরিবর্তনেরও তিনি ইঙ্গিত দেন। প্রসঙ্গত, বর্তমানে সংশ্লিষ্ট কাউন্টি কাউন্সিলই লোকাল হাসপাতালগুলি চালায়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জরুরি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পিয়াত্রা নিম্ট কাউন্টি হাসপাতালের আইসিইউ বন্ধ হচ্ছে না। অন্য রুমে আইসিইউ চালু করার ব্যবস্থা হয়েছে।
এর আগে ২০১৫ সালে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টের নাইট ক্লাবে এক অগ্নিকাণ্ডে ৬৫ জনের প্রাণহানি হয়েছিল। হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষিতে ক্ষোভ উগরে দেন সেখানে ভর্তি থাকা রোগীর স্বজনেরা। গণবিক্ষোভও দেখানো হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির মধ্যে রোমানিয়ার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো দুর্বল। এই দেশটিতে এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৫৩ হাজার ১৮৫ জনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৮,৮১৩ জনের। রোমানিয়ার বিভিন্ন হাসপাতালে শনিবার পর্যন্ত ১৩ হাজার কোভিড আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ১,১৭২ জন।