প্রকাশের সময় :৩১ মে, ২০২১ ১০:০১ : অপরাহ্ণ
কিশোর ইন্দুকুরি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ‘ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান (আইআইটি)’ খড়গপুর থেকে পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার। ঝুলিতে রয়েছে বিদেশি ডিগ্রিও। আমেরিকার নামী সংস্থায় চাকরি করতেন। কিন্তু সেই চাকরিতেও মন লাগছিল না। আমেরিকার লোভনীয় চাকরি ছেড়ে শেষে কিনা তিনি গরু কিনে দুধ বেচে উপার্জন করছেন! কথাটা শুনতে বড় অদ্ভুত লাগে বৈকি। তাই বলে তার দূরদৃষ্টিকে হেলাফেলা করা যাবে না।
জানেন কি গরু কিনে দুধ বেচেই আজ তার বছরে আয় ৪৪ কোটি টাকা!
কিশোরের জন্ম হায়দরাবাদে। ছোটবেলা সেখানেই কেটেছে তার। তার পর আইআইটি খড়্গপুর থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চলে যান আমেরিকায়। ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে স্নাতকোত্তর এবং ২০০৫ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ২০০৫ সালেই এরিয়া কোঅর্ডিনেটর এবং সিনিয়র প্রসেস ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে আমেরিকার ইনটেল সংস্থায় কাজে যোগ দেন। ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই সংস্থাতেই কাজ করে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু মোটা মাইনের এই চাকরিতে কিছুতেই মন বসাতে পারছিলেন না।
২০১২ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে দেশে ফিরে আসেন কিশোর। তিনি তখনও জানতেন না দেশে ফিরে ঠিক কী করতে চলেছেন। হায়দরাবাদে ফেরার পর একটি বিষয় কিশোরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেখানে গরুর খাঁটি দুধের খুব আকাল। সেই থেকেই দুধের ব্যবসা করার মনস্থির করে ফেলেন তিনি। একজন বিদেশি ডিগ্রিধারী ইঞ্জিনিয়ার গরু কিনে দুধ বেচবেন তা জানতে পেরে পাড়া-প্রতিবেশীরা ঠাট্টা করতে শুরু করেন। তবে তাতে পাত্তা দেননি কিশোর। বরং পরিবারকে পাশে নিয়ে সঞ্চিত অর্থে প্রথমে ২০টি গরু কেনেন তিনি। তারা নিজেরাই দুধ দুইয়ে তা বেচতে শুরু করেন।
২০১২ সালে হায়দরাবাদেই ছেলের নামে এক সংস্থা গড়ে তোলেন কিশোর। ৬ বছরের মধ্যে তার গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ হাজার। আরও গরু কিনে আস্তে আস্তে আরও বড় করে তোলেন ফার্ম। এখন ১০ হাজার পরিবার তার ফার্ম থেকে গরুর দুধ কেনেন।
তার অধীনে ১২০ জন কর্মচারী কাজ করেন। তার ব্যবসায় বার্ষিক লেনদেন বা টার্নওভার ৪৪ কোটি টাকা!
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা