রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪:৩৯ অপরাহ্ণ
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহরুন রুনির হত্যা মামলার বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী শিশির মনির।
আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মামলার বাদী নওশের রোমান, সাগর-রুনির ছেলে মাহির সারওয়ার মেঘ উপস্থিত ছিলেন।
শিশির মনির বলেন, মামলার তদন্ত শেখ হাসিনা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা বাধাগ্রস্ত করেছে।, যার কারণে ১৩ বছর পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।
এই আইনজীবী বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগাযোগের বিষয়ে মুখ খুলেছেন জেলে থাকা আসামিরা। অতীতে তদন্ত প্রক্রিয়ায় আইনিভাবে চলতে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। দ্রুতই হাইকোর্টে দাখিল হবে তদন্ত রিপোর্ট।
সম্প্রতি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ মামলাটি তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন করেছে। আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের কথা রয়েছে।
গঠিত টাস্কফোর্সের সমস্যরা মামলার বাদী, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন শিশির মনির।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি নিজেদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। তাদের একমাত্র ছেলে মাহির সারোয়ার মেঘ (৫) সেসময় বাড়িতে ছিল। এ ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ আট জনকে আসামি করা হয়।
বাকি আসামিরা হলেন-বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ রুদ্র জামিনে আছেন। বাকিরা এখনো কারাগারে।
এ মামলার তদন্তে প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানার একজন এসআই নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু চার দিন পর ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ডিবি পুলিশ দুই মাসে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার যায় র্যাবের কাছে। কিন্তু দীর্ঘ ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।
বিভিন্ন সময়ে পুলিশ-ডিবি-র্যাবের হাত ঘুর এখন মামলার তদন্তভার পেয়েছে পিবিআই। কবে নাগাদ মামলার তদন্ত শেষ হবে বলতে পারছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় ২০২১ সালের মার্চ মাসে র্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টে অগ্রগতির প্রতিবেদন দিয়ে বলেছিলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজন অপরিচিত ব্যক্তি জড়িত ছিল। সাগরের হাতে বাঁধা চাদর এবং রুনির টি-শার্টে ঐ দুই ব্যক্তির ডিএনএর প্রমাণ মিলেছে। অপরাধীদের শনাক্ত করতে ডিএনএ রিপোর্ট প্রস্তুতকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ল্যাবে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। প্রতিষ্ঠান দুটি ডিএনএর মাধ্যমে অপরাধীর ছবি বা অবয়ব প্রস্তুতের কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে বিগত সরকারের একাধিক প্রভাবশালী জড়িত’