রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, গাজীপুর
প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ
দেশজুড়ে শুরু হওয়া অপারেশন ‘ডেভিল হান্টে’ গাজীপুরে আওয়ামী লীগের ৬২ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে গাজীপুর জেলা ও নগরীতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব তাদের আটক করে।
জেলার ৫ থানায় আটক হয়েছে ৪০ জন। আর নগরীর ৭ থানায় আটক হয়েছে ২২ জন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আজ রোববার সকালে গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, গাজীপুরে গতরাত থেকেই সাড়াশি অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ সব মোড়ে জোরদার করা হয় টহল কার্যক্রম। গাজীপুর জেলা প্রশাসকের অফিসের সামনে চেকপোস্ট বসিয়ে মোটরসাইকেলসহ সড়কে বিভিন্ন গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালান সেনা সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ড ধীরাশ্রম দক্ষিণখানে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের খবর ছড়িয়ে পড়ে। এই খবর শোনার পর প্রতিহত করতে শিক্ষার্থীরা সেখানে রওনা হয়। দ্রুত ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে চলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটিতে লুটপাট হচ্ছে। এ সময় মাইকে ঘোষণা দিয়ে শত শত মানুষকে জড়ো করা হয়। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে বাসার ছাদে নিয়ে পেটানো হয়। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও পেটায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
আহত শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, হামলার শিকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা অসংখ্যবার ফোন দিয়েও ওসির সহয়তা পাননি। এ ঘটনায় দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে ওসি আরিফুল রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দাবি, মারধরের শিকার কেউ বাড়িতে হামলা করতে যাননি। কয়েকজন ছাত্রকে সেখানে আটকে রাখা হয়েছে–এমন খবর দিয়ে উদ্ধারের জন্য তাদের ডেকে নিয়ে ফাঁদে ফেলে মারধর করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের যুগ্ম আহ্বায়ক নাবওল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের রাত সাড়ে ৮টার দিকে বলা হয়, সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা হয়েছে। সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা যেন দ্রুত গিয়ে তাদের বাঁচাই। খবর পেয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা সেখানে তাদের উদ্ধার করতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে নিয়ে তাদের আটকে মারধর করে।’
গাজীপুরের একাধিক ব্যক্তি জানান, ধীরাশ্রমের দক্ষিণখান এলাকা মূলত আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত। এখানকার বেশির ভাগ লোকই আওয়ামী লীগ সমর্থক। এই কথা এলাকার সবাই জানে। তবু মাত্র ১৫-২০ জন লোক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালাতে যাবে, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। গত রাতের ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। পুলিশের উচিত, বিষয়টি তদন্ত করে বের করা।
আরও পড়ুন:
গাজীপুরে মোটরসাইকেলে এসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি
ডিআইজি মোল্যা নজরুলসহ পুলিশের চার বিতর্কিত কর্মকর্তা আটক