রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২:১৭ অপরাহ্ণ
কুমিল্লায় যৌথবাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতা তৌহিদুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের কমান্ডারকে প্রত্যাহার করেছে সেনাবাহিনী।
আজ শনিবার আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি আনুমানিক রাত ৩টায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যৌথবাহিনীর অভিযানে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা হতে তৌহিদুর রহমানকে (৪০) আটক করা হয়। একই দিন দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনা তদন্তে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে, উক্ত সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া, মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্ঘাটনে একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে যুবদল নেতা তৌহিদুর রহমানকে আটকের পর মৃত্যুর ঘটনায় জরুরি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেকোনো ধরনের হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে যুবদল নেতার মৃত্যুর বিষয়ে জরুরি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
যুবদল নেতা তৌহিদুর রহমানের পরিবারের সূত্রে জানা যায়, তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে একটি শিপিং এজেন্টে চাকরি করতেন। গত রোববার তার বাবা মোখলেছুর রহমানের মৃত্যুর খবরে তিনি বাড়ি আসেন। গতকাল শুক্রবার বাবার কুলখানি হওয়ার কথা ছিল। তৌহিদুলের মা প্রায় ২০ বছর আগে মারা গেছেন। সংসারে তার স্ত্রী ও চার কন্যাসন্তান রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার তৌহিদের ভাই আবুল কালাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তার বাবা চার দিন আগে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর ৩টি গাড়ি ও একটি লাল রঙের গাড়ি বাড়িতে আসে। তৌহিদুল ইসলামের কাছে অস্ত্র আছে—এমন অভিযোগে তাকে ধরে নিয়ে যায়।
আবুল কালাম বলেন, ‘আমার ভাই কখনই অস্ত্র আনতে পারে না। তার সম্পর্কে আমাদের পুরো এলাকা খুব ভালো করে জানে। আমরা বারবার বলার পরেও তারা নিয়ে যায় আমার ভাইকে। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ আমাদের জানায়, তাকে গোমতী পাড়ের গোমতী বিলাশ নামক স্থান থেকে তারা উদ্ধার করেছে। সে নাকি হাসপাতালে আছে। আমরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখি তার লাশ। তার শরীরের বেদম মারের আঘাতের চিহ্ন।’
এদিকে এ ঘটনায় বিচার দাবি করে ফেসবুকে পৃথক পোস্ট দিয়েছেন বিএনপি ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যুবদল নেতার মৃত্যুতে জড়িত সেনা সদস্যদের বিচার চেয়েছে বিএনপি।
তৌহিদুর রহমান কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের পাঁচথুবী গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে ও ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক।
আরও পড়ুন: রাজধানীর প্রেসক্লাব এলাকায় লিফলেট বিতরণ করলো নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ