রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২:৩১ অপরাহ্ণ
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যায় শেখ হাসিনার খুব কাছের তিনজন জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া।
আজ ২৭ জানুয়ারি সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার ২০ বছর। ওই হত্যার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যাকারীদের আড়াল করার চেষ্টা করেছে অভিযোগ করে রেজা কিবরিয়া বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগের তিনজন গুরুত্বপূর্ণ এমপি আবু জাহির, মজিদ খান এবং ডা. মুশফিক চৌধুরী জড়িত ছিলেন। হত্যার জন্য টাকা দিয়েছিলেন সালমান এফ রহমান। বিভিন্ন কারণে আমার বাবার সঙ্গে তার শত্রুতা ছিল। সালমান এফ রহমান তার ব্যাংকের দুর্নীতি, শেয়ার মার্কেটের কেলেঙ্কারির জন্য আব্বার ওপর ক্ষেপে ছিলেন। সে কারণেই তিনি পুরো ফান্ডিং করেছেন। তারা সবাই শেখ হাসিনার খুব কাছের লোক। তাই সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। সুষ্ঠু বিচার হয়নি।
তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে আমার বাবার সাথে সালমান এফ রহমানের শত্রুতা ছিল। সে তার ব্যাংকের দুর্নীতি ও শেয়ার মার্কেটের কেলেঙ্কারির জন্য আমার বাবার উপর ক্ষেপেছিল। সে কারণে সালমান এফ রহমান এ হত্যাকান্ডে পুরো ফান্ডিং করেছে।
রেজা কিবরিয়া বলেন, ২০ বছর পার হয়ে গেছে আমার বাবাকে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়। তার শরীরে প্রায় ৪০০ স্পিন্টার বিদ্ধ হয়। একটি ভাঙা অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। তিনি পথে মারা যান। আমরা দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বিচারের অপেক্ষা করছি। আওয়ামী লীগ আমলে কোনো সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। কারণ আওয়ামী লীগের অনেকেই এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। এটি আমরা জানতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যাদেরকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত উল্লেখ করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে তারা কেউ এর সাথে জড়িত নয়। তিনি ঘটনার পুনঃতদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
রেজা কিবরিয়া বলেন, ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শেখ হাসিনা সরাসরি জড়িত কিনা সেটা আমি নিশ্চিত নই। তিনি জড়িত থাকতেও পারেন। তবে এটা আমি নিশ্চিত যে, তিনি হত্যাকারী এবং হত্যার মদতদাতাদের আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। এটা তিনি সচেতনভাবেই করেছেন।
তিনি বলেন, আমি আমার পিতার হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত চাই। আমি বিশ্বাস করি সঠিকভাবে তদন্ত করা হলে কারা এর সাথে জড়িত এবং কারা মদতদাতা বেরিয়ে আসবে। এর পিছনে শেখ হাসিনার কোন হাত ছিল কিনা সেটাও জাতি জানতে পারবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন শাহ এএমএস কিবরিয়া। সভা শেষে ফেরার সময় দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় তিনি ও তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ মোট ৫ জন নিহত হন। এতে আহত হন ৪৩ জন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়েছে প্রায় ৮ বছর আগে। কিন্তু নানা কারণে বিচারকার্যে দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় বিচার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা। বর্তমানে উক্ত মামলা সিলেট স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।