রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৫:৪৬ অপরাহ্ণ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যদি ভারত ফেরত না দেয়, তাহলে সেটা হবে ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আজ মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার জন্য ভারতের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ভারত যদি শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পন না করে, তাহলে ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে। পরবর্তীতে আমরা বিশ্ব সমাজে কী পদক্ষেপ নেব তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঠিক করা হবে। আমাদের যা যা করণীয় আছে আমরা করে যাচ্ছি। আরও কিছু করার থাকলে আমরা করে যাবো।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা হবে।তিনি আরও বলেন, সাইবার আইনের স্পিচ অফেন্স সংক্রান্ত ১১৩টি মামলা পাবলিক প্রসিকিউটরদের মাধ্যমে প্রত্যাহার করেছে আইন মন্ত্রণালয়। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট মামলা প্রত্যাহার করা হবে।’
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাত্র ২২ দিনের বিক্ষোভে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের।
গত ৩ আগস্ট ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লাখো মানুষের সমাবেশে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে সরকার পতনের এক দফা দাবি ঘোষণা করা হয়।
পরদিন ৪ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে ছাত্র-জনতাকে প্রতিরোধ করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্র নিয়ে মাঠে নামে। এ দিন সারাদেশে পুলিশ, শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতাকর্মীসহ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায়।
এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন ঘেরাও করতে ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেদিন রাস্তায় নেমে আসেন লাখো মানুষ। শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে পতন হয় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের।
ওই দিন বেলা আড়াইটার দিকে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে গণভবন থেকে হেলিকপ্টারে করে কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটিতে চলে যান। সেখান থেকে তারা বিমানবাহিনীর একটি বিমানে করে ভারতে পালিয়ে যান।
এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটে। শেখ হাসিনার পতনের পর লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে আনন্দ-উল্লাস করেন।
এরপর ছাত্র-জনতার দাবির মুখে গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর বদলে যেতে শুরু করে দেশের সার্বিক চিত্র।
আরও পড়ুন: দিল্লি ফ্যাসিবাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়: রিজভী