রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৭:১০ অপরাহ্ণ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ এলাকায় ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গাছ কাটা নিয়ে উত্তেজনার এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছেন।
তারা হলেন-বিনোদপুর ইউনিয়নের ঘন্টোলা বিশ্বনাথপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে রনি ও কারিগঞ্জ গ্রামের সেরাজুল ইসলামের ছেলে ফারুক।
আজ শনিবার বেলা ১২টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় জমির কাঁচা গম ও আম গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষ চলাকালে ভারতীয় অংশ থেকে বাংলাদেশের বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়।
কিরণগঞ্জ সীমান্ত থেকে এ উত্তেজনা শুরু হয় যা পরে ছড়িয়ে পড়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে আলোচিত সেই চৌকা সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত। ওই সীমান্তের তিন কিলোমিটার পর্যন্ত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
চৌকা-কিরণগঞ্জ সীমান্তে দিনভর উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ছিল। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)- ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী (বিএসএফ) পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে কাজ করেছে। বর্তমানে বিজিবি সদস্যরা সীমান্তে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের শান্ত রাখার চেষ্টা করছেন।
৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমাদের চৌকা এবং কিরণগঞ্জ দুটি বিজিবি ক্যাম্পের মাঝামাঝি স্থানে ১৭৭ এর ৩এস বরাবর বাংলাদেশি কিছু আমগাছ ছিল। বাংলাদেশের আমগাছ কাটাকে নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। দুই দেশের মানুষ শূন্যরেখা বরাবর দাঁড়িয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিজিবির জনবল বৃদ্ধি করেছি। বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে বিজিবি ও বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছে। বিএসএফের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে, যে গাছগুলো কাটা হয়েছে, অন্যায় হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে তারা এটা ব্যবস্থা নেবে। সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে আছি। কেউ যেন শূন্যরেখা অতিক্রম না করে, উত্তেজনাকর পরিবেশ প্রশমিত করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। বিজিবির পাশাপাশি দেশপ্রেমিক জনগণ আমাদের পাশে আছে।পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, চৌকা সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করে অন্তত ৩০টি আম গাছ ও শতাধিক বরই গাছ কেটে ফেলেছে ভারতীয় জনগণ।
কালিগঞ্জ ঘুমটোলা গ্রামের রবু বলেন, ‘আহত ফারুক মোটরসাইকেলে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি দেখার জন্য অবস্থান করলে ভারতীয়দের ছোড়া পাথরে তিনি মাথায় গুরুতর আহত হয়েছেন।’
মিঠুন নামে একজন বলেন, ‘আহত রনি সীমান্তে বাঁশ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার সময় ভারতীয় ১০ জনের মতো বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে তার ওপর আক্রমণ করে। এতে তিনি আহত হন।’
উল্লেখ্য, চৌকা সীমান্তের ওপারে ভারতের সুখদেবপুর সীমান্তে বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করেছিল। তখন চৌকা সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সীমান্ত রক্ষায় বিজিবির সাথে কাস্তে হাতে এক কৃষক!