শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৪ মাঘ, ১৪৩১ | ১৭ রজব, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

ঐক্যের মাঝে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্ম, একতাই আমাদের শক্তি: ড. ইউনূস


রাজনৈত দল ও অংশীজনদের সঙ্গে সর্বদলীয় সভায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ৬:১৫ অপরাহ্ণ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ৫ আগস্টের পুরো অনুভূতিটাই ছিল একতার অনুভূতি। ঐক্যের মাঝে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্ম হয়েছে, একতাই আমাদের শক্তি।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী সবার উদ্দেশ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সবার সঙ্গে দেখা হলে, কথা হলে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। মনে সাহস পাই। কারণটা পরিষ্কার। কারণ এ সরকারের জন্ম হয়েছে ঐক্যের মাঝখানে। ঐক্যর দ্বারা এটার সৃষ্টি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সনদ ঘোষণার প্রেক্ষাপট বিস্তারিত তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মাঝখানে একদিন ছাত্ররা এসে বললো-তারা একটা ঘোষণাপত্র ঘোষণা করবে, আমাকেও সেখানে থাকতে হবে। আমি বুঝতে চাইলাম কী ঘোষণাপত্র দিচ্ছে। তাদের কথা শুনে আমি বললাম যে, এটা হবে না। এটা হবে না, আমার চাওয়াটাও হবে না, তোমাদেরও করা ঠিক হবে না। কারণ তোমরা যদি ৫ আগস্টে ফিরে যেতে চাও, সেদিনের পরিপ্রেক্ষিতে যা হয়েছিল সেটাকে রিক্রিয়েট করতে হবে। একা এটা করা যাবে না।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র ঐক্যবদ্ধভাবে দেওয়া গেলে সবার মনে সাহসের সঞ্চার হবে এবং দেশ চমকে উঠবে। অন্যথায় এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। তাহলে ঘোষণাপত্র দেওয়ার আর দরকার নেই। সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষণাপত্র দেওয়া গেলে দেশের জন্য ভালো হবে। এছাড়া আন্তজার্তিকভাবেও এটি অনেক গুরুত্ববহণ করবে। এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে দেশবাসী ও বিশ্বকে আমরা ঐক্যের বার্তা দিতে চাই।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্টের পুরো অনুভূতিটাই ছিল একতার অনুভূতি। কেউ বলে নাই যে তুমি অমুক তুমি অমুক। তোমরা যদি করতে চাও, সবাইকে নিয়ে করতে হবে। এটা পরিষ্কার, এটা না করলে এটা ঠিক হবে না। যে একতা দিয়ে তোমরা ৫ আগস্ট সৃষ্টি করেছিলে সেটার অবমাননা হবে। ওই সময় শিক্ষার্থীরা আমার কথায় খুব একটা খুশি হয়নি। কিন্তু ক্রমে তারা বুঝলো যে ৫ আগস্ট যদি রিক্রিয়েট করতে হয়, তাহলে এভাবে একত্রে করতে হবে। সে কথা থেকেই এ আলাপ শুরু। কীভাবে একত্রে করা যাবে। আজকের আলোচনাটা একে কেন্দ্র করেই হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বলেন, আপনারা দোয়া করবেন, আমি যতদিন আছি এই একতা নিয়েই থাকবো। কাজেই সে পথে আমাদের চলতে হবে। আমাদের সেই সাহসটা আপনারা দেন, যখন আমি আপনাদের সঙ্গে একত্রে বসি। আপনাদের দেখে আজকে খুবই সাহসী মনে হচ্ছে ৫ আগস্টের কথা স্মরণ করে।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। তখন এ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা তৈরি হয়। ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

গতকাল বুধবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রের ওপর একটি সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজন করবে।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দলের ‘বিরল’ সফর

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর