বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১ মাঘ, ১৪৩১ | ১৪ রজব, ১৪৪৬

মূলপাতা আন্তর্জাতিক

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক


টিউলিপ সিদ্দিক

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৫ অপরাহ্ণ

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার সরকারের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

আজ মঙ্গলবার রাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য সরকারের সিটি ও দুর্নীতি বিরোধী মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি।

তিনি মন্ত্রী থাকলে সরকার তার কাজে মনযোগ দিতে পারবে না এমন কথা উল্লেখ করে টিউলিপ বলেছেন, “এ কারণে আমি আমার মন্ত্রির পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, পেনসনমন্ত্রী এমা রেনল্ডস টিউলিপের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

প্রসঙ্গত, টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি এবং দেশটির ট্রেজারি ও নগর বিষয়ক মন্ত্রী। দেশটির ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। কিন্তু, তার মাতৃভূমি বাংলাদেশেই এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যেখানে তিনি এবং পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

 

এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে মন্ত্রী থাকা অবস্থায় বিনামূল্যে ফ্ল্যাট গ্রহণ করেছেন তিনি। কোনো বিশেষ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সেই উপহারের ফ্ল্যাট তিনি নিয়েছেন কি না, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

এমন অবস্থায় টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ। যদিও হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেটের এমপি টিউলিপ দাবি করেছেন, তিনি কোনো ভুল করেননি।

এদিকে ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন বিবৃতি দিয়ে বলেছে, টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ সরকারে যে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো স্পষ্টতই গুরুতর ‘স্বার্থের সংঘাত’। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার খালা ও দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে তদন্ত করছে, তাতে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম এসেছে।

যুক্তরাজ্যের দুর্নীতিবিরোধী দাতব্য সংস্থাগুলোর এই জোট আরও বলেছে, যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতা এবং খ্যাতি রক্ষায় সরকারের পক্ষে বেশ কিছু জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আর এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ টিউলিপ সিদ্দিকের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কারণে সৃষ্ট স্বার্থ-সংঘাতে এটি এখন স্পষ্ট নয় যে, তিনি এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অবস্থানে আছেন কি না।

আরও পড়ুন: লন্ডনে ফ্ল্যাট কেলেঙ্কারির ঘটনায় মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন টিউলিপ

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর