শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ | ২৬ পৌষ, ১৪৩১ | ৯ রজব, ১৪৪৬

মূলপাতা অর্থ-বাণিজ্য

বাণিজ্য মেলায় এক প্লেট চিকেন ফ্রাই ৭৫০, একটা পরোটা ৫৫ টাকা


পূর্বাচলে শুরু হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা।

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২:০৭ অপরাহ্ণ

এক প্লেট চিকেন ফ্রাই ৭৫০, এক পিস পরোটা ৫৫, এক প্লেট চিকেন সবজির দাম ৫৫০ টাকা! পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় খাবারের এমন গলাকাটা দামে বিপাকে পড়তে হচ্ছে দর্শনার্থী ও স্টলের কর্মীদের।

মেলায় খাবারের দোকানগুলো বেশি দাম রাখছে বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। তাদের অভিযোগ, খাবারের দোকানগুলো স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি দাম রাখছে।

স্টলের কর্মীরা বলছেন, খাবারের চড়া দামের কারণে বেতনের টাকা রেস্তোরাঁতেই শেষ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের মেলায় দেশি-বিদেশি ৩৬১টি প্যাভিলিয়নে প্রায় ৪ হাজার খণ্ডকালীন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু খাবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।

জানা যায়, মেলার রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা একটি শক্তিশালী চক্র গড়ে তুলেছেন, যেখানে তারাই মেলার কর্মীদের খাবার সরবরাহ করেন। মাথাপিছু প্রতিবেলার খাবারের দাম রাখা হচ্ছে ১২০-২০০ টাকা। অথচ মেলার একজন কর্মীর বেতন সাধারণত ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হয়ে থাকে। আর তাই বাধ্য হয়ে অনেকেই দুপুরের খাবার বাড়ি থেকে রান্না করে অথবা বাইরে থেকে সাশ্রয়ীমূল্যে কিনে আনেন।

 

এবারে মেলার মূল ভবনের পেছনেই রেস্তোরাঁর জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খাবারের মূল্যও নির্ধারণ করে দিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ। তবে খাবারের নির্ধারিত মূল্য বেশি বলে অভিযোগ করেছেন মেলার কর্মী ও দর্শনার্থীরা।

নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, চিকেন বিরিয়ানি ৩৯৫, চিকেন চাপ চার ভাগের এক ভাগ ২৮৫, চিকেন মাসালা চার ভাগের এক ভাগ ৩৩০, এক প্লেট চিকেন ফ্রাই ৭৫০, এক পিস পরোটা ৫৫, এক প্লেট চিকেন সবজির দাম ৫৫০ টাকা রাখা হচ্ছে। অথচ এসব খাবার মেলার বাইরে অর্ধেকের চেয়ে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া খাবারের জন্য চওড়া মূল্য গুনতে হলেও এগুলোর মান নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন কর্মী অভিযোগ করেন, এক মাসের আয়ের বেশিরভাগ টাকাই খরচ হচ্ছে মেলা প্রাঙ্গণে খাবার খেতে। মেলায় খাবার বিক্রির জন্য রেস্তোরাঁ মালিকরা সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। তারা বাইরে থেকে খাবার আনতে বাধা দিচ্ছেন। বিষয়টি মেলা কর্তৃপক্ষের বিবেচনা করা উচিত। না হলে সামনের বার আসবেন না অনেকেই।

রাজধানীর উত্তরার বাসিন্দা আমিন হোসেন বলেন, মেলায় খাবারের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অনেক বেশি। দাম অনুযায়ী খাবারের টেস্ট ও মান একেবারেই নগণ্য।

নজরুল ইসলাম লিখন নামে একজন বলেন, এক পিস (প্লেট) চিকেন সবজির দাম নিয়েছে ৭৫০ টাকা। অথচ এর অর্ধেকের চেয়েও কম দামে মেলার বাইরে থেকে এই খাবার পাওয়া যাচ্ছে। এত দাম নেওয়ার পরও খাবারের মান নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই তাদের।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক বিবেক সরকার বলেন, মেলার ভেতরের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব রান্নাঘর রয়েছে। খাবারের মান নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর মেলায় রয়েছে। কেউ অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। খাবারের দাম নিয়ে এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেননি। এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: ঢাকা বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থী বেশি, ক্রেতা কম

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর