রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৪:৩৭ অপরাহ্ণ
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে দীর্ঘ সাত বছর পর দেখা হলো মা-ছেলের। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডনে পৌঁছানোর পর তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান তার ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান। এ সময় তারেক রহমান তার অসুস্থ মাকে জড়িয়ে ধরলে মা-ছেলের মধ্যে এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়।
যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করে। হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়াকে ভিআইপি প্রটোকল দেন।
এ সময় যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হযরত আলী খান বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
দলীয় সূত্র বলছে, লন্ডনে পৌঁছে সরাসরি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার। তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে কিছুদিন থাকার পর যাবেন যুক্তরাষ্ট্রে। মেরিল্যান্ডের পূর্ব বাল্টিমোরে অবস্থিত জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন তিনি।
এর আগে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করেন খালেদা জিয়া। বিমানবন্দরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা তাকে বিদায় জানান।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই চোখ ও পায়ের ফলোআপ চিকিৎসার জন্য সবশেষ লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর দেশে ফিরে একাধিক দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের শুরু থেকেই কারান্তরীন হন তিনি।
দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেয়। এরপর থেকে ৬ মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেত্রীর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার।
এমন অবস্থায় গত ৫ আগস্ট গণ-আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে বিএনপি।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর গত ২১ আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে বাসায় ফেরেন তিনি।
আরও পড়ুন: চাপের মধ্যেই হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ালো ভারত