বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | ২৪ পৌষ, ১৪৩১ | ৭ রজব, ১৪৪৬

মূলপাতা বিএনপি

রাতে লন্ডনে রওনা দিচ্ছেন খালেদা জিয়া


বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৫ অপরাহ্ণ

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে রাতে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে রওনা দিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

আজ মঙ্গলবার রাত ১০টায় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করবে তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। বুধবার (৮ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোরে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন তিনি। সেখানে ভিআইপি প্রটোকল পাবেন তিনি।

হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে রিসিভ করবেন তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও স্ত্রী ড. জোবাইদা রহমান এবং বিএনপি নেতারা। আর ঢাকা থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে চিকিৎসকদের পাশাপাশি যাবেন তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান।

এদিকে লন্ডনে দীর্ঘ আট বছর পর বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা হতে যাচ্ছে খালেদা জিয়ার। এর আগে ২০১৬ সালে সর্বশেষ ছেলেকে সশরীরে সামনে পেয়েছিলেন মা খালেদা জিয়া। ওই বছর ৯ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাজকীয় আমন্ত্রণে সপরিবারে ওমরা পালন করেছিলেন তারা। এরপর আট বছর কেটে গেছে। এই সময়ের মধ্যে আর কখনো তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা হয়নি খালেদা জিয়ার। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগও পাননি বিএনপি চেয়ারপারসন। ফলে এই আট বছরে দেশের বাইরে কোথাও তার যাওয়া হয়নি।

দীর্ঘদিন পরে খালেদা জিয়ার লন্ডন আগমন উপলক্ষে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সেখানকার বিএনপির নেতাকর্মীরা। বুধবার সকালে হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাবেন তারা। ।

গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলন করেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, কাতারের আমিরের পাঠানো ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ কাতারের রাজধানী দোহা হয়ে লন্ডন পৌঁছাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেখান থেকে সরাসরি যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকে নেওয়া হবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী চলবে খালেদা জিয়ার পরবর্তী চিকিৎসা।

ডা. জাহিদ বলেন, লন্ডন ক্লিনিক নামে একটি পুরানো হাসপাতাল আছে, সেখানে ম্যাডামকে ভর্তি করানো হবে এবং চিকিৎসা চলবে। এই হাসপাতালে ম্যাডামের পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। তাদের পরামর্শে চিকিৎসার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডা. জাহিদ বলেন, ম্যাডামের যে বয়স এবং তাতে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিটে যাওয়ার পর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে, সেখানে (লন্ডন ক্লিনিকে) এই সুবিধা আছে। সুতরাং তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে। তাই এই বিষয়ে এখন আমরা ভাসাভাসা কথা বলছি। কারণ আমরা জানি না কালকে সফরটা কেমন হবে। খালেদা জিয়াকে লন্ডনের যে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে সেটি সবচেয়ে পুরানো, বিশ্বস্ত এবং আধুনিক সুবিধা সম্বলিত মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টার। সেখানে তাদের সব ধরনের ব্যবস্থা আছে।

 

আমেরিকায় চিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা যদি খালেদা জিয়ার আমেরিকায় চিকিৎসার সুপারিশ করেন কিংবা জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যদি এমন চিকিৎসা না থাকে, যেটা ম্যাডামের প্রয়োজন তখন বিষয়টি আসবে।

লন্ডন থেকে আমেরিকা যাওয়া প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা এম এ মালেক বলেন, ‘আমেরিকায় যাওয়া-আসাও তার শারীরিক অবস্থার জন্য কষ্টসাধ্য। আমরা জানতে পেরেছি, এ কারণে লন্ডনেই চিকিৎসা শেষ করে ফেরার সময় ওমরাহ করে দেশে ফিরতে চান বেগম জিয়া। আর লন্ডনের চিকিৎসকরা যদি মনে করেন, আমেরিকাতে তার চিকিৎসা প্রয়োজন, তাহলেই তাকে আমেরিকায় নেওয়া হবে।’

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরের দিন খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দুর্নীতির দুই মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তিনি দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। তাই দেশে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার অস্ত্রোপচারসহ চিকিৎসা চলছিল।

অবশেষে বিদেশ যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। বিএনপি চেয়ারপারসনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নেওয়া হবে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। এর মধ্যদিয়ে আট বছর পর সাক্ষাৎ ঘটবে মা-ছেলের।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ, বৈঠকের নেপথ্যে কী?

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর