রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি ২০২৫, ৭:২৩ অপরাহ্ণ
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট সীমান্তে জহুর আলী (৬০) নামের এক বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এরপর ভারতীয় পুলিশ সীমান্তে এসে এই বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
গতকাল সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
জহুর আলী চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ডুলনা গ্রামের মনসুব উল্লাহর ছেলে।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, জহুর আলীকে হত্যার পর তার লাশ ভারতীয় পুলিশ উদ্ধার করে ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে জহুর আলী একজন সঙ্গীকে নিয়ে বাল্লার গুইবিল সীমান্তে যান। এ সময় বিএসএফ ধাওয়া দিলে জহুর আলী তাদের হাতে ধরা পড়েন। তার সঙ্গী পালিয়ে যান। বিএসএফ জহুর আলীকে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে তারা জানতে পারেন তার লাশ খোয়াই পুলিশ সীমান্ত থেকে উদ্ধার করেছে। তাদের ধারণা বিএসএফ তাকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ সীমান্তে ফেলে রাখে।
স্বজনদের বরাত দিয়ে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মালেক চৌধুরী জানান, জহুর আলী ঢাকায় একটি কোম্পানিতে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতেন। তিনদিন আগে তিনি বাড়িতে আসেন। আসার সময় বেশ কিছু লুঙ্গি নিয়ে আসেন। গত সোমবার বিকেলে তিনি বাড়ির পার্শ্ববর্তী নালুয়া বাগানে যান। যাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যদের বলে যান, লুঙ্গিগুলো বিক্রি করে বাড়ি ফিরবেন; কিন্তু আর ফেরেননি।
চুনারুঘাট থানার ওসি নূর আলম জানান, ভারতের অভ্যন্তরে বড়কিয়া সীমান্তে একজন বাংলাদেশি নাগরিকের লাশ খোয়াই পুলিশ স্টেশনের পুলিশ নিয়ে গেছে। তার লাশ খোয়াই হাসপাতালে রাখা হয়েছে বলে তিনি জেনেছেন। তবে কীভাবে তিনি মারা গেছেন বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি।
তিনি আরও জানান, এখন লাশ আনার জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করতে হবে। আমাদের এ বিষয়ে কিছু করার নেই।
বিজিবি হবিগঞ্জ ৫৫ ব্যাটালিয়ন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে জানায়, ভারত সীমান্তে নিহত জহুর আলীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তারা নিশ্চিত হয়েছেন, তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তিনি ঢাকায় একটি কোম্পানির নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করত। তিনি গত ৫ জানুয়ারি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। ৬ জানুয়ারি কোনো এক সময়ে হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন গুইবিল বিওপির মানিকভান্ডার এলাকার মেইন পিলার ১৯৬৮/এম-এর কাছ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। আজ সকাল ১০টার দিকে ভারতের প্রায় ৩ কিলোমিটার অভ্যন্তরে স্থানীয় জনগোষ্ঠী খোয়াই থানার অন্তর্গত গৌড়নগর এলাকায় রাস্তার পাশে এক ব্যক্তিকে নিথর পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় খোয়াই থানায় খবর দেন। ভারতের খোয়াই থানা থেকে একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে নিশ্চিত করেন। ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনের জন্য সংশ্লিষ্ট থানার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে লাশ বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: সীমান্তে ফেলানী হত্যার ১৪ বছর, বিচারের জন্য আর কত অপেক্ষা