রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:১৫ অপরাহ্ণ
স্ত্রীসহ কানাডা যাওয়ার সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মইনুল ইসলামকে আটক করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মাথায় বাহিনীটির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান মইনুল ইসলাম।
তিনি মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার পর বাহিনীটির ইউনিফর্ম পরিবর্তন হয় এবং সীমান্ত বাহিনীতে যোগ করা হয় একটি গোয়েন্দা ইউনিট। পরে মইনুল ইসলামকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত করা হয় এবং সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে জেনারেল স্টাফ করা হয়।
২০১৫ সালের জুলাইয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার হন মইনুল ইসলাম। পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। বিজিবির মহাপরিচালক পদে যোগদানের আগে জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজ বাংলাদেশের আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সের (এএফডব্লিউসি) প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে মর্মান্তিক নৃশংস বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তখন সকাল ৯টা ২৭ মিনিট। দরবার হলে চলমান বার্ষিক দরবারে একদল বিদ্রোহী বিডিআর সৈনিক ঢুকে পড়ে। সিপাহি মঈন নামে একজন বিডিআর সদস্য মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে। এরপরই ঘটে যায় ইতিহাসের সেই নৃশংস ঘটনা।
বিডিআরের বিদ্রোহী সৈনিকরা সেনা কর্মকর্তাদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে তাদের পরিবারকে জিম্মি করে ফেলে। পুরো পিলখানায় এক ভীতিকর বীভত্স ঘটনার সৃষ্টি করে।
এ সময় তারা বিদ্রোহের নামে বাহিনীর তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ছাড়া নারী ও শিশুসহ ১৭ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়।
পিলখানায় নারকীয় এই হত্যার ঘটনায় দায়ের করা হয় দুটি মামলা। এর মধ্যে সেনা কর্মকর্তাদের নিহতের ঘটনায় দণ্ডবিধি আইনে করা হয় হত্যা মামলা। অপরটি হয় বিস্ফোরক আইনে। বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলাটি ১৫ বছর ধরে সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্যে আটকে আছে।
হত্যা মামলায় নিম্ন আদালত ২০১৪ সালে ১৫২ বিডিআর জওয়ানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১৬১ জনকে। সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পান আরো ২৫৬ জন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান ২৭৮ জন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। ২০১৭ সালে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ ১৫২ জনের মধ্যে ১৩৯ জওয়ানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। যাবজ্জীবন দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় আরো ২০০ জনকে। খালাস পান ৪৫ জন।
আরও পড়ুন:
পিলখানা হত্যাকাণ্ড: তদন্ত কমিশনে যারা রয়েছেন
সেদিন পিলখানায় কী ঘটেছিল, চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক ডিজি মইনুল
১৫ বছরেও অজানা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ‘মাস্টারমাইন্ড’
পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন সাবেক দুই সেনা কর্মকর্তা