রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪:০৬ অপরাহ্ণ
৯টি মেগা প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের ৪ জনের বিরুদ্ধে ৮০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার কমিশনের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আশ্রায়ণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বেজা ও বেপজার বিভিন্ন প্রকল্পসহসহ ৯টি প্রকল্পে অন্তত ৮০ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ লুটপাট করা হয়ছে। এসব অর্থ আত্মসাৎ ও দেশের বাইরে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে কমিশনের বৈঠকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুদকের ঊর্ধ্বতন সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান হবে তারা হলেন-শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং টিউলিপ সিদ্দিক।
এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
গত ৩ সেপ্টেম্বর এ অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। রিটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদেরকে রিটের বিবাদী করা হয়।
প্রসঙ্গত, জুলাই বিপ্লবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১৭ আগস্ট গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামে মার্কিন একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি আত্মসাৎ করেছেন তিনি। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এ অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেয়। যাতে মধ্যস্থতা করেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক।
এতে বলা হয়, রাশিয়ার সহযোগিতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণে খরচ ধরা হয় এক হাজার ২৬৫ কোটি ডলার। প্রয়োজনের তুলনায় যা অনেক বেশি। যাতে মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এই বাজেট থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের সুযোগ করে দেয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম। নিজের ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে এ চুক্তি করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ মধ্যস্থতার বিনিময়ে পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ পেয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ রেহানা ও পরিবারের কয়েকজন সদস্য।
অবশ্য, পরবর্তীতে ২০ আগস্ট গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের প্রতিবেদনের সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতি দেয় রোসাটম কর্তৃপক্ষ। এতে তারা বলে, নিজস্ব সুনাম ও স্বার্থ রক্ষায় আদালতের শরণাপন্ন হতেও প্রস্তুত আছে রোসাটম।
আরও পড়ুন: ৫ বিলিয়ন ডলার লুট: শেখ হাসিনা, জয় ও টিউলিপের দুর্নীতি অনুসন্ধানে রুল