রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮:১৬ অপরাহ্ণ
বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারারের আমলে গুম হওয়া বেশিরভাগ ব্যক্তিকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এরপর মরদেহ সিমেন্টের ব্যাগ দিয়ে বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়।
গতকাল শনিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে ওই প্রতিবেদনের কিছু অংশ প্রকাশ করা হয়। এতে গুম হওয়া ব্যক্তিদের হত্যার তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, কমিশন গুমের পর মেরে ফেলার পদ্ধতি সম্পর্কে যাচাইকৃত বিস্তারিত প্রতিবেদন পেয়েছে। একটি কার্যকর পদ্ধতি হলো মাথায় গুলি করা। এরপর মরদেহ সিমেন্টের ব্যাগ দিয়ে বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া অনেককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, র্যাবে কর্মরত সামরিক কর্মকর্তারা এই পদ্ধতিকে মরদেহ ডুবিয়ে দেওয়ার আদর্শ পদ্ধতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হত্যার উপযুক্ত স্থান হিসেবে বুড়িগঙ্গা নদী, শীতলক্ষ্যা নদী (কাঞ্চন সেতু) এবং পোস্তগোলা সেতুর কাছাকাছি এলাকার উল্লেখ আছে। সুন্দরবনের জলদস্যুদের কাছ থেকে জব্দ করা একটি নৌকার উল্লেখ আছে প্রতিবেদনে যেটি পোস্তগোলা সেতুর কাছে রাখা হয়েছিল।
প্রতিবেদনে র্যাবের এক ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। তার বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয় র্যাবের তৎকালীন গোয়েন্দা প্রধান পরিচালিত একটি সেশনে ‘র্যাবে ঢোকার অংশ হিসেবে’ একটি সেতুতে দুজনকে হত্যা করা হয়েছে।
র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগে নিযুক্ত আরেক সৈনিকের বরাতে এতে বলা হয়, এক ভুক্তভোগী নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাকে নদী থেকে উঠিয়ে আনা হয় এবং পরে ঘটনাস্থলেই হত্যা করা হয়।
কমিশনের এই অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বিস্তারিত অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। এতে বলা হয়, কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা ও মুক্তির বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন।
প্রতিবেদনে গুমের শিকার ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুসহ র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে কমিশন।
‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে জমা দেওয়া রিপোর্টে কমিশন সদস্যরা এ পর্যন্ত প্রাপ্ত এক হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন, র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ