বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা


আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:১৮ অপরাহ্ণ

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার।

আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, নিরাপত্তার কারণে আপাতত আগরতলার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে কনস্যুলার সেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে ওই মিশন থেকে বাংলাদেশের ভিসা সেবা বন্ধ থাকবে।

এর আগে আজ আগরতলার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, নিরাপত্তাহীনতাজনিত অবস্থার প্রেক্ষাপটে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সহকারি হাইকমিশন, আগরতলাতে সকল প্রকার ভিসা ও কনস্যুলার সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এর আগে চলমান ঘটনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। বিকেল ৪টায় তিনি সেখানে হাজির হয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করেন।

পরে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক আটকে থাকার কারণ নেই, আমাদের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক গঠনমূলক সম্পর্ক নির্মাণ করতে চায় ভারত।

আধা ঘণ্টার এই বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে কথা হয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা‌র।

প্রণয় ভার্মা‌ বলেন, ভারত পারস্পারিক আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে এবং শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক আটকে থাকবে না। আমরা দুই দেশের মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে আগ্রহী।

 

একই ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পুলিশ সদর দপ্তরের এক উপ-পুলিশ সুপারকে (ডিওয়াইএসপি) প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে সাতজনকে আটক করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার এ হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় বাংলাদেশ। এতে বলা হয়, আগরতলার হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও আক্রমণের কারণে বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে ক্ষুব্ধ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্য চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করে যে বিক্ষোভকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। এসময় স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা পতাকার খুঁটি ভাঙচুর করে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে এবং সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করে। দুঃখের বিষয়, হাইকমিশন প্রাঙ্গণ রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা শুরু থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা রাখেনি। সহকারী হাইকমিশনের সব সদস্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

বাংলাদেশ সরকার আরও জানাতে চায় যে, বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনের ওপর এই জঘন্য হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অসম্মান একটি প্যাটার্নে এসেছে, গত ২৮ নভেম্বর কলকাতায় একই ধরনের হিংসাত্মক বিক্ষোভ হয়েছিল। আগরতলায় কূটনৈতিক মিশনের ওপর এমন হামলা ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশন, ১৯৬১ লঙ্ঘন হয়েছে।

আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বের হয়ে যা বললেন প্রণয় ভার্মা

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর