রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩:০৬ অপরাহ্ণ
ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, হাসিনার শাসনামলে গণতন্ত্রের মূলনীতি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। টানা তিন মেয়াদে ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিলেন হাসিনা। এর মাধ্যমে তিনি নিজেকে এবং তার দলকে বিজয়ী ঘোষণা করেছিলেন। একজন ফ্যাসিবাদী শাসক হিসেবে এসব করেছিলেন হাসিনা।
গত ৩০ নভেম্বর জাপানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
ড. ইউনূস বলেন, এ বছরের আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন সরকারি চাকরিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপরই শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন হাসিনার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট ছাত্র-নাগরিকের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। তিনি হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতে পালিয়ে যান। অক্টোবরে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা এবং তার বেশ কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
হাসিনার প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট হেলিকপ্টারে চড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এর আগে বিক্ষোভে নিহত হন শত শত বিক্ষোভকারী। অক্টোবরে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা এবং তার বেশ কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বিচার শেষে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় এলে আমরা ভারতের কাছে হাসিনার আনুষ্ঠানিক হস্তান্তরের অনুরোধ করব। এক্ষেত্রে উভয়দেশের স্বাক্ষরিত একটি আন্তর্জাতিক আইনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ আইন মানতে ভারত বাধ্য থাকবে।
ড. ইউনূস বলেন, হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশের শাসনকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গছে, আমরা এখন তা পুনর্গঠনের গুরুত্বপূর্ণ কাজের মুখোমুখি হয়েছি। গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা আমাদের কাজ। নির্বাচনের আগে আমাদের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র এবং বিচারব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার করতে হবে।
সাধারণ নির্বাচনে ড. ইউনূস প্রার্থী হবেন কি না তা জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমি রাজনীতিবিদ নই। আমি সবসময়ই রাজনীতি থেকে দূরে থেকেছি। রাষ্ট্রের যেসকল ব্যক্তিরা নীতিকে সমুন্নত রাখেন, নিয়ম-কানুন অনুসরণ করেন এবং নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রাখেন তাদের নির্বাচনে দাঁড়ানো উচিত।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান বলেন, এই দায় (রোহিঙ্গা) বাংলাদেশ কতদিন বহন করবে? রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য আমাদের একটি সুস্পষ্ট গন্তব্য ঠিক করা দরকার। মিয়ানমারে জাতিসংঘ-শাসিত নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পক্ষে বাংলাদেশ। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমার অনুমতি দিলে বিপুল পরিমাণ এই রোহিঙ্গা তাদের দেশেই থাকতে পারবে। সেখানকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে তারা অন্য দেশে স্থানাস্তরিত না হয়েই তাদের নিজ ভূমিতে ফিরে যেতে পারবে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে নিয়ে কড়া ভাষায় পোস্ট দিলেন সোহেল তাজ