রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪:০৫ অপরাহ্ণ
লন্ডনে বসবাসরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন তা নিয়ে দলটির নেতাকর্মীরা অপেক্ষা প্রহর গুনছেন। কিন্তু তার দেশে ফেরার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চারটি মামলা। এসব মামলা নিস্পত্তি হওয়ার পর তার দেশে ফেরার বাধা কেটে যেতে পারে।
তারেক রহমান ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জরুরি অবস্থা জারির পর গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে সপরিবারে লন্ডনে পাড়ি জমান। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তারেক রহমান আর দেশে ফেরেননি। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং রায়ও হতে থাকে।
রাজধানীতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুই মামলায় হাইকোর্টের রায়ে গতকাল রোববার খালাস পেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একই দিন সিলেটে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুই ছাত্রলীগ নেতার দায়েরকৃত দুটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৮৪টি মামলার মধ্যে ৫টিতেই দণ্ড হয়। এছাড়া খারিজ, খালাস ও অব্যাহতি পেয়েছেন ৩৯টি মামলায়। বিএনপির আশা, দণ্ড পাওয়া বাকি চার মামলায়ও ন্যায়বিচার পাবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বাকি মামলাগুলো হলো-
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট সাজা দেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে তারেক রহমানকে নয় বছর ও জোবাইদা রহমানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তারেক রহমানকে পলাতক ঘোষণা করে ওই মামলার বিচারকাজ শেষ করা হয়। পলাতক থাকায় এই মামলায় আপিল হয়নি।
অর্থপাচার মামলা
২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের মামলায় ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালত তারেক রহমানকে খালাস দেন। ওই মামলায় তারেকের বন্ধু ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে দুদক তারেক রহমানকে খালাস দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে। ওই আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ২১ জুলাই বিচারিক আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির অভিযোগ এনে তারেক রহমানকে ১০ বছরের দণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলায় সাজা হয় তার মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ারও।
নড়াইলে মানহানির মামলা
২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানকে নড়াইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করায় নড়াইলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানহানির এ মামলা করেছিলেন এক বীর মুক্তিযোদ্ধা।
২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু বক্তব্য দেন তারেক রহমান। সেই খবর প্রকাশিত হয় দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে। এতে শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানহানি হয়েছে জানিয়ে সে সময় নড়াইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান বিশ্বাস নড়াইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা: তারেক রহমানসহ সব আসামি খালাস