রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ
বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়্যারম্যান তারেক রহমাহ ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি এই মামলার অভিযোগপত্রও অবৈধ ঘোষণা করেছে আদালত।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার পর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সাক্ষীরা ঘটনার বর্ণনা করছেন, কিন্তু কে গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছেন তা কোনো সাক্ষী বলেননি। এছাড়া কে গ্রেনেড সরবরাহ করেছে তা চার্জশিটে উল্লেখ করেননি তদন্ত কর্মকর্তা। মামলার চার্জশিট বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে গ্রহণ করানো হয়নি। এটি আইনের লংঘন। এ সময় আসামিপক্ষের যুক্তিও রায়ে উল্লেখ করেন বিচারপতিরা।
এর আগে, গত ২১ নভেম্বর এই মামলার ডেথ রেফারেন্স এবং বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল শুনানি শেষ হয়।
শুনানিতে আইনজীবী শিশির মনির উল্লেখ করেন, মুফতি হান্নানের দ্বিতীয় জবানবন্দির ভিত্তিতে অধিকতর যে তদন্ত হয়েছে, সেটিরও আইনগত ভিত্তি নেই। নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন এবং আসামিদের খালাসের আবেদন জানান।
ওই দিন মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান রাখে হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় রায়ের জন্য আজ রোববার মামলা দুটি আদালতের কার্যতালিকায় রাখা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে দলটির নেতাকর্মীসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ কয়েকশ নেতাকর্মী। ওই হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলা দুটির রায় দেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেয় বিচারিক আদালত।
মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালে এটি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে, কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই মামলায় আলাদা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানি শুরু করে।
তবে সরকার বদলের পর দ্বৈত বেঞ্চের একজন বিচারপতি পরিবর্তন হলে আপিল শুনানির বেঞ্চ পুনর্গঠন হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৩১ অক্টোবর নতুন করে আবারও আপিলের শুনানি শুরু হয় নবগঠিত বেঞ্চে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যে হাসিনা-ঘনিষ্ঠদের ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান