বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আইন-আদালত

ট্রাইব্যুনালকে বললেন চিফ প্রসিকিউটর

জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ‘সুপ্রিম কর্মকর্তা’ ছিলেন পুলিশের আইজি মামুন


আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় পুলিশের সাবেক আইজি আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :২০ নভেম্বর, ২০২৪ ২:১৪ : অপরাহ্ণ

পুলিশের সাবেক আইজি আব্দুল্লাহ আল-মামুন জুলাই-আগস্ট গণহত্যার সুপ্রিম কর্মকর্তা ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

আজ বুধবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজ শুরু হয়। এ সময় পুলিশের সাবেক আইজিসহ ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তাজুল ইসলাম।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারাদেশে যে গণহত্যা চালানো হয়েছে তার সুপ্রিম কর্মকর্তা ছিলেন সাবেক পুলিশের সাবেক আইজি আব্দুল্লাহ আল-মামুন। তার নেতৃত্বে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গণহত্যা চালানো হয়েছে।

এর আগে সকালে সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, ডিএমপির সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক ও ঢাকা উত্তর ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেনকে প্রিজনভ্যানে করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।

 

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এই আট কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গত ২৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। একইসঙ্গে পুলিশের সাবেক ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই ৮ কর্মকর্তা আত্মগোপনে ছিলেন। বিভিন্ন সময় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আদেশ মোতাবেক আজ তাদের আনা হয় ট্রাইব্যুনালে। এদের মধ্যে ছয়জনকে কাশিমপুর কারাগার থেকে আনা হয়েছে। বাকি দুজনের মধ্যে সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রসিকিউশন অফিসে ১২৫টির মতো অভিযোগ জমা পড়ে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বরাবরও অভিযোগ জমা পড়ছে।

এর মধ্যে গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। পরে গত সোমবার জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথমবারের মতো ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব ও সাবেক একজন বিচারপতিসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশি মামলার হুমকি এস আলমের

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর