রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১১:১৭ : পূর্বাহ্ণ
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম রিমান্ড শুনানিতে বিচারকের সামনে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘এই দিন দিন না আরও দিন আছে।’
আজ মঙ্গলবার ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গতকাল সোমবার রাজধানীর নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া কামরুল ইসলামকে আজ ৮ দিনের রিমান্ডে দিয়েছে আদালত।
রিমান্ড শুনানিতে পুলিশ জানায়, ১৯ জুলাই নীলক্ষেতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালায়। সে সময় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ঘটনার সঙ্গে কামরুল ইসলাম সরাসরি জড়িত। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এ নেতা ধানমন্ডিসহ আশপাশের এলাকায় সে সময় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তার সরাসরি ইন্ধনে গুলি চালানো হয়।
তবে আসামিপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে তাকে নির্দোষ দাবি করে জামিন চান। যার বিরোধিতা করে রাষ্ট্র পক্ষ এবং রিমান্ডের স্বপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত কামরুল ইসলামের কাছে জানতে চান কিছু বলবে কি না। এ সময় কামরুল ইসলাম জানান, যে এলাকার ঘটনা তিনি সেখানকার এমপিও না। শুধু শুধু হয়রানির উদ্দেশ্যে তাকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে।
বিচারকের সামনে কামরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার জুনিয়র আইনজীবীরা আজ আমাকে নিয়ে যা বললেন, এই দিন দিন না আরও দিন আছে’। এ সময় আদালতে চিৎকার করে ওঠেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে কামরুল ইসলামকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই অনেক আওয়ামী লীগ নেতার মতো আত্মগোপনে ছিলেন ঢাকা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে ২৪টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন কামরুল ইসলাম। এর আগে তিনি ২০০৮ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি টানা চারবার সংসদ সদস্য হন।
বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কথা বলতে সরব ছিলেন সাবেক এই মন্ত্রী। আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে নিম্ন আদালতের বেশিরভাগ কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ আছে।
তার নিজের নামে রাজধানীতে রয়েছে বাড়ি, ফ্ল্যাট ও বেশ কয়েক কাঠা জমি। আরও আছে দুটি টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি। এ ছাড়াও নিজের নামে ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে দেশে-বিদেশে অঢেল সম্পদ গড়ে তুলেছেন।
খাদ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় দুর্নীতির মাধমে ব্রাজিল থেকে নিম্নমানের গম ক্রয় করে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখেও পড়নে তিনি। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এরইমধ্যে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।
আরও পড়ুন: আত্মগোপনে থাকা সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গ্রেপ্তার