রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১১:২৩ : অপরাহ্ণ
স্বাধীনতার পর প্রথমবারে মতো পাকিস্তানের করাচি থেকে গত ১৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে আসা কনটেইনার জাহাজে কী কী এসেছে তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জাগায় নানা আলোচনা চলছে। পণ্য খালাসের পরদিনই ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’ জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করেছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ জাহাজে কী এসেছে তা জানিয়েছে কাস্টমস বিভাগ।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাওয়ার আগে জাহাজটি থেকে ৩৭০ একক কনটেইনার নামানো হয় বন্দরে। এর মধ্যে ২৯৭ একক কনটেইনার এসেছে করাচি বন্দর থেকে, আর বাকি ৭৩ একক কনটেইনার এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।
তালিকা অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি আনা হয়েছে টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত সোডিয়াম কার্বনেট বা সোডা অ্যাশ, যা রয়েছে ১১৫ কনটেইনারে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আমদানি পণ্য হলো খনিজ পদার্থ ডলোমাইট, যা এসেছে ৪৬ কনটেইনারে। এছাড়া ৩৫ কনটেইনারে চুনাপাথর এবং ছয় কনটেইনারে ম্যাগনেশিয়াম কার্বোনেট আমদানি করা হয়েছে।
এ ছাড়া কাচশিল্পের কাঁচামাল ভাঙা কাচ আনা হয়েছে ১০ কনটেইনারে। শতভাগ রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের কাঁচামাল কাপড়, রং ইত্যাদি রয়েছে ২৮ কনটেইনারে। একটি কনটেইনারে রয়েছে গাড়ির যন্ত্রাংশ। এসব পণ্য আমদানি করেছে আকিজ গ্লাস কারখানা, নাসির ফ্লোট গ্লাস, প্যাসিফিক জিনস, এক্স সিরামিকস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
শিল্পের কাঁচামাল ছাড়াও পেঁয়াজ আনা হয়েছে ৪২ একক কনটেইনারে। এসব কনটেইনারে পেঁয়াজ রয়েছে ৬১১ টন। এর বাইরে ১৪ একক কনটেইনারে আলু আমদানি হয়েছে ২০৩ টন। এই দুটো পণ্য আনা হয়েছে হিমায়িত কনটেইনারে। ঢাকার হাফিজ করপোরেশন, এম আর ট্রেডিংস ও চট্টগ্রামের আল্লাহর রহমত স্টোর পেঁয়াজ-আলু এনেছে।
দুবাই থেকে আসা কন্টেইনারে খেজুর, মার্বেল ব্লক, কপার ওয়্যার, জিপসাপ এবং লোহার টুকরো। এ ছাড়া একটি কন্টেইনারে অ্যালকোহল জাতীয় কিছু পণ্য রয়েছে।
সাধারণত ঘোষণা অনুযায়ী পণ্য ঠিক আছে কি না, তা যাচাই করে ছাড়পত্র দেয় কাস্টমস। এরপরই আমদানিকারকেরা খালাস করে নেন।
পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানিকারক খাতুনগঞ্জের ফারুক ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার ফারুক আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, এর আগে করাচি থেকে পণ্য প্রথমে শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া কিংবা সিঙ্গাপুরের বন্দরে এনে ফিডার জাহাজে চট্টগ্রামে পাঠানো হতো। তবে সরাসরি এই সেবা চালুর ফলে করাচি থেকে জাহাজে পণ্য বোঝাই করার পর আর কোনো মধ্যবর্তী বন্দরে কনটেইনার নামানোর প্রয়োজন হবে না, যা সময় এবং খরচ দুই-ই কমাবে।
সমুদ্রপথে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের বন্দরগুলোর চেয়ে বেশি, যা ২,৬১২ নটিক্যাল মাইলের বেশি। এই দীর্ঘ দূরত্বের কারণে, নতুন সেবা চালুর জন্য দুবাইভিত্তিক কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা ‘ফিডার লাইনস ডিএমসিসি’ কয়েকটি দেশের বন্দরকে যুক্ত করেছে। তাদের সেবার আওতায়, প্রথমে জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে পাকিস্তানের করাচি বন্দরে পৌঁছাবে, তারপর ভারতের মুন্দ্রা, ইন্দোনেশিয়ার বেলাওয়ান ও মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্র যোগাযোগ চালু, উদ্বিগ্ন ভারত