রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:২৭ : অপরাহ্ণ
পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় পর আবার পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি সমুদ্রপথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। গত ১৩ নভেম্বর করাচি থেকে একটি পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর মধ্যদিয়েই এ যোগাযোগ পুন:প্রতিষ্ঠা পায়। যা দুই দেশের মধ্যে নতুন করে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।
১৯৭১ সালের পর এই প্রথম কোন পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ সরাসরি বাংলাদেশের বন্দরে নোঙর করেছে। তবে এটি ভারতের নিরাপত্তা মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফে আজ শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ব্যস্ততম বন্দর। এটি মিয়ানমারের সন্নিকটে অবস্থিত এবং বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে। এই বন্দরটি কেবল অর্থনৈতিক নয়, কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। তাই চট্টগ্রামে পাকিস্তানি জাহাজের নিয়মিত উপস্থিতি অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি সামুদ্রিক সংযোগ ভারতের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলোতে সম্ভাব্য অস্থিরতা তৈরির কাজে ব্যবহার করা হতে পারে। কারণ, ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সেভেন সিস্টার্স বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছাকাছি।
ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের প্রধান দুই বন্দর চট্টগ্রাম ও মংলায় পাকিস্তান কোন জায়গা পায়নি। সিঙ্গাপুর ও কলম্বোর মাধ্যমে দুদেশের বাণিজ্য হতো। তবে এখন পাকিস্তানি জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে। ফলে পাকিস্তান থেকে চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ জিনিস (অস্ত্র) আসতে পারে। যেগুলো সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে যেতেও পারে। যেমন ২০০৪ সালে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ১ হাজার ৫০০ চাইনিজ অস্ত্র ট্রলারে করে আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী দল উলফার জন্য পাঠিয়েছিল। তবে সেগুলোর উলফার হাতে যাওয়ার আগেই জব্দ করা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যবহার করে ভারত চট্টগ্রাম ও মংলা থেকে চীনকে দূরে রেখেছিল। কিন্তু এখন পাকিস্তান চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে। ফলে বিষয়টি অবশ্যই এই অঞ্চলের ভূরাজনীতির ওপর প্রভাব ফেলবে। কেননা মিয়ানমারও চট্টগ্রামের খুব কাছে, সেই সঙ্গে মিয়ানমারে অবস্থা এখন টালমাটাল। ভারত শক্কা করছে, মিয়ানমার থেকে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং মাদক কারবারি বেড়ে যেতে পারে।
এদিকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে জাহাজ আসার বিষয়টিকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে অভিহিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট। কেননা এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান জটিল সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু