রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:৪৫ : পূর্বাহ্ণ
রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে গতরাত থেকেই অবস্থান নিয়েছে ছাত্র-জনতা। ওই এলাকায় সাঁজোয়া যান ও জলকামানের গাড়ি নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ অবস্থায় আজ রোববার বিকেলে জিরো পয়েন্টে কি কর্মসূচি পালন করতে পারবে আওয়ামী লীগ?
গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি তুলে আজ রাজধানীর গুলিস্তানে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই কর্মসূচি প্রতিহত করতে একইস্থানে গণজমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও আওয়ামী লীগকে কর্মসূচি পালন করতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
আজ সকাল ৮টার দিকে শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে জিরো পয়েন্টে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এর পর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষও সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেছেন।
এদিকে কর্মসূচি ঘিরে বিশৃঙ্খলা এড়াতে গুলিস্তানে নূর হোসেন চত্বর ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। জিরো পয়েন্টসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের মোড়ে অন্যদিনের তুলনায় পুলিশের বাড়তি সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টার পোস্ট করা হয়। যাতে লেখা, ‘১০ নভেম্বর আসুন জিরো পয়েন্টে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’।
পরে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে অপর এক পোস্টে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে লেখা হয়, ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, গণতন্ত্র ও সুবিচার প্রতিষ্ঠায় দলে দলে ঢাকায় আসুন।’ পোস্টে বিকেল ৩টায় কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানানো হয়।
এদিকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণার পর পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড প্রোফাইলে করা পোস্টে রোববার গণজমায়েতের ডাক দিয়ে লিখেছেন-‘পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে গণজমায়েত’।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির ভেন্যুও জিরো পয়েন্ট। সেখানে দুপুর ১২টাতেই ছাত্র-জনতা জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। তবে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঠেকাতে গত রাত থেকেই রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট দখলে নিয়েছে ছাত্র-জনতা।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘গণহত্যাকারী ও নিষিদ্ধ সংগঠনের কেউ কর্মসূচি করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’
গতকাল শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বর্তমানে যে রূপে আছে তাতে এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলের বাংলাদেশে বিক্ষোভ করার কোনো সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশে কেউ সমাবেশ, মিছিল করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ণশক্তি দিয়ে সেগুলো মোকাবিলা করবে। অন্তর্বর্তী সরকার সহিংসতা বা আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো প্রচেষ্টাকেই বরদাশত করবে না।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এখনও দলটি সফলভাবে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। এর আগে ১৫ আগস্ট, জেল হত্যা দিবসের দিনগুলো নেতাকর্মীদের পালনের আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া মেলেনি।
আরও পড়ুন: আ.লীগকে ঠেকাতে রাতেই জিরো পয়েন্ট দখল ছাত্র-জনতার