যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা আজ রাতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। সবাই ভেবেছিলেন আমরা করতে পারবো না। এটা আমাদের রাজনৈতিক বিজয়।’
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) গভীর রাতে ফ্লোরিডায় উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের সামনে ভাষণ দেওয়ার সময় এই ঘোষণা দেন তিনি।
এর আগে মার্কিন গণমাধ্যম ফক্স নিউজের পূর্বাভাসে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ট্রাম্প এখন পর্যন্ত ২৭৭ ইলেক্টোরাল ভোট নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে কমলার ঝুলিতে ২২৬ ইলেক্টোরাল ভোট।
ফক্স নিউজের এই পূর্বাভাসের কিছুক্ষণ পরেই ভাষণ শুরু করেন ট্রাম্প। বিজয় ঘোষণা করে ট্রাম্প সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে ভাষণ শুরু করেন।
ট্রাম্প ভাষণে বলেন, ‘এটা আমাদের একটা চমৎকার মুহূর্ত। আমেরিকা আমাদের একটি অভূতপূর্ব এবং শক্তিশালী ম্যান্ডেট দিয়েছে।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের দেশকে ঠিক করতে হবে। প্রতিটা শহরে আমি আপনাদের জন্য লড়াই করবো। এটি হবে আমেরিকার স্বর্ণসুযোগ তৈরির সুযোগ। এ সময় তিনি মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন বললে সমর্থকরাও একই স্লোগান দিতে থাকেন।’
সুইং স্টেটগুলোর কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘নর্থ ক্যারোলিনা আমি ভালোবাসি, মিশিগান আমি আপনাদের ভালোবাসি। বিজয় ছাড়া আমাদের অন্য কোনো পথ ছিল না।’
আমাদের চমৎকার অনুভূতি হচ্ছে বলে উল্লেখ করে ট্রাম্প ভাষণে তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পের কথাও বলেন। তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মেলানিয়াকে এসময় তিনি ধন্যবাদ জানান। তিনি তার সন্তানদের কথাও উল্লেখ করেছেন ভাষণে।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে মোট ৫১৪টি ইলেকটোরাল ভোট আছে, যেখানে আর মাত্র ২৩টি ভোটের হিসাব বাকি। এখন পর্যন্ত কাগজে-কলমের হিসাবে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্যই হোয়াইট হাউজের দুয়ার খোলা মনে হলেও বাস্তবে ব্যবধান গড়ে দিচ্ছে সাত সুইং স্টেটের ৯৩টি ইলেকটোরাল ভোট, যেখানে এরই মধ্যে নর্থ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া ও পেনসিলভানিয়ার ৫১টি ভোট দখলে নিয়েছেন ট্রাম্প।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের আপডেট দেখাচ্ছে, সুইং স্টেট খ্যাত মিশিগান এবং উইসকনসিনেও ভালোভাবেই এগিয়ে আছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। স্টেটগুলোর সবশেষ বুথফেরত জরিপ তার জয়ের আভাসই দিচ্ছে। মোট ২৬টি ইলেকটোরাল ভোট আছে স্টেট দুটিতে। এর মধ্যে মিশিগানে ১৫ এবং উইসকনসিনে ১০টি ইলেকটোরাল ভোট আছে। অন্য দুই সুইং স্টেট অ্যারিজোনা ও নেভাদায় ভোটগ্রহণ শেষ হতে এখনও অনেকখানি সময় বাকি। যথাক্রমে ১১টি ও ৬টি ইলেকটোরাল ভোট আছে স্টেট দুটিতে।
বুথফেরত জরিপ অনুযায়ী আভাস মিলেছে, তিনশোরও বেশি ভোটে জিতে ১৩২ বছরের বিরল এক রেকর্ডে ভাগ বসাতে যাচ্ছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মূলত, বাইডেনের চার বছরের শাসনামলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কর্মসংস্থানের সংকট সৃষ্টির পাশাপাশি অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে পড়ে গেছে জীবনযাত্রার মান। অন্যদিকে, বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ও অভ্যন্তরীণ কিছু নীতির কারণেও সেখানকার মুসলমান নাগরিকরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন ডেমোক্র্যাটদের প্রতি। বাইডেন প্রশাসনের বিগত দিনের ভুলগুলোর খেসারতই কমলাকে দিতে হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: ভোট গণনায় হাডাহাড্ডি লড়াই, এগিয়ে ট্রাম্প