ইসকন এনজিও প্রতিষ্ঠান হলেও তাদের হিসাবের দীর্ঘদিন কোনো অডিট হয় না। তাদের আয়-ব্যয়ের উৎস কেউ জানে না। অতি দ্রুত স্বাধীন কমিশন গঠন করে সংগঠনটির আয়ের উৎস প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের মুখপাত্র শরিফুল ওসমান-বিন হাদি এ দাবি জানান।
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে তার এক বক্তব্যের জন্য সাত দিনের মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার সময় বেঁধে দেওয়াসহ সাম্প্রতিক ইসকনের কার্যক্রমের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়।
শরিফুল ওসমান বলেন, ইসকন যেহেতু আমাদের অনুষ্ঠানে দেওয়া ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্যতম সিপাহসালার মাহমুদুর রহমানের একটি যৌক্তিক বক্তব্যের জের ধরে তাকে ক্ষমা চাইতে বলেছে, তাই আমরা কিছু প্রশ্ন তুলতে চাই। ইসকনের আয়ের উৎস কী? তারা কীভাবে এতো কোটি কোটি টাকা বাজেট করছে। বাংলাদেশে বিদ্যমান নীতি অনুযায়ী, এসব এনজিও প্রতিষ্ঠান কেবল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবে। কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে পারবে না। অথচ ইসকন যেসব কর্মকাণ্ড করছে, সবই রাজনৈতিক।
ইনকিলাব মঞ্চের এই মুখপাত্র বলেন, ইসকন চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে তাদের বড় বড় সমাবেশগুলো করছে, দাবি তুলছে। তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করতে চেয়েছে। এর মাধ্যমে মূলত তারা একটা জিনিস হাসিল করতে চায়, মাইনোরিটি সাপ্রেশন হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে তারা মূলত আমেরিকাকে ইন্ডিয়ার পররাষ্ট্রনীতির পক্ষে আনার চেষ্টা করে চলেছে।
ইসকনের দেওয়া ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের বিরোধিতা করে শরিফুল ওসমান বলেন, বাংলাদেশের কোনো মন্দিরে-উপাসনালয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুনিনি। বাংলাদেশের হিন্দুরা ‘হরে কৃষ্ণ, হরে রাম’ বলেন। এই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে গত ১০-১৫ বছরে ভারতে বিজেপি অসংখ্য মুসলমানকে হত্যা করেছে। এই স্লোগান ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’র মতো, যা দিয়ে সব অপরাধের বৈধতা দেওয়া হয়।
ইসকনের পরিচয় পরিষ্কার করার দাবি জানিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের এই মুখপাত্র বলেন, ইসকন কি ধর্মীয় সংগঠন নাকি রাজনৈতিক, তা পরিষ্কার করতে হবে। তারা রাজনৈতিক সংগঠনের মতো সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে কোন আইনে তারা নিবন্ধন পেয়েছে, তা প্রকাশ করতে হবে। গত ১০-১৫ বছরে তারা যে অনুদান পেয়েছে, তার সঠিক হিসাব এনজিও ব্যুরোর কাছে দেওয়া হয়েছে কি না, তা জানাতে হবে।
শরিফুল ওসমান বলেন, বাংলাদেশে একটি বয়ান তৈরি হয়েছে যে ইসকনের বিরুদ্ধে কথা বললেই হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলা হয়। ইসকন কোনোভাবেই বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীর প্রতিনিধি নয়। বরং তাদের হাতে বাংলাদেশের অনেক সনাতন ধর্মাবলম্বী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তারা গত কয়েক বছরে অনেক মন্দির দখল করেছে। ইসকন বাংলাদেশে দাঙ্গা লাগাতে চায়। তারা বহির্বিশ্বে দেখাতে চায় বাংলাদেশে দাঙ্গা লেগেছে। গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার আমলে হিন্দুদের জমি দখল হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ইসকন কোনো বিবৃতিও দেয়নি।
ইনকিলাব মঞ্চের এই মুখপাত্র বলেন, অতি দ্রুত স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে ইসকনের আয়ের উৎস প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় আমরা রিট আদায় করতে বাধ্য হবো এবং রাজপথে কঠোর কর্মসূচি পালন করবো।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাসহ পাঁচ রাজনীতিবিদের প্রতীকী ফাঁসি