মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৩০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা দেশজুড়ে

এবার খুলনায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন দিলো ছাত্র-জনতা


আজ সন্ধ্যায় খুলনায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, খুলনা
প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর ২০২৪, ৮:১৫ অপরাহ্ণ

এবার খুলনায় ডাকবাংলা মোড়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-শ্রমিক-জনতা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পর ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় আশপাশের দোকানপাটগুলো। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা জানান, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-শ্রমিক-জনতা বিকেলে নগরীর শিববাড়ী মোড়ে সমাবেশ করে। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা মিছিল সহকারে শহীদ হাদিস পার্কের দিকে যেতে থাকলে পথিমধ্যে ডাকবাংলো মোড়ে জাতীয় পার্টির (এরশাদ) কার্যালয়ের সামনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তখন মিছিল থেকে জাতীয় পার্টির খুলনা মহানগর ও জেলা কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে। পরবর্তী সময় তারা কার্যালয়ের ভেতর প্রবেশ করে চেয়ার এবং টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাব ভাঙচুর করে। এরপর ভাঙচুর করা মালামাল বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তারা জাতীয় পার্টির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এদিকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের টুটপাড়া স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পর থেকে পার্টি অফিসের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

জানতে চাইলে খুলনা সদর থানার ওসি মো. মুনীর উল গিয়াস বলেন, ৫০-৬০ জন যুবক মিছিল সহকারে জাতীয় পার্টি অফিসে ঢুকে কিছু চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছে। পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এখন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কার্যালয়ের ভেতর থেকে দুটি প্লাস্টিকের চেয়ার বাইরে অগ্নিসংযোগ করে। যারা আক্রমণ করেছে, তাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। প্রয়োজন হলে রোববারও পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

 

ওসি বলেন, জাতীয় পার্টির নেতারা অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু জানান, মাগরিবের নামাজের সময় পার্টি অফিসে কেউ ছিল না। তখন ৫০-৬০ জনের একদল ছাত্র-যুবক তাদের কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপর তারা পার্টি কার্যালয়ে ঢুকে সাইনবোর্ড, চেয়ার-টেবিল, ফ্যান, টিভি ভাঙচুর করে। তারা কয়েকটি ফাইল ও কাগজপত্র নিয়ে যায়। এ ছাড়া তারা কয়েকটি চেয়ার, ব্যানার-প্লাকার্ড নিয়ে পার্টি অফিসের সামনের রাস্তায় আগুনে পুড়িয়ে দেয়।

তিনি জানান, এ ঘটনায় তারা মামলা করবেন। এ ছাড়া রোববার সন্ধ্যায় পার্টি অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতা’ ব্যানারে একদল লোক একটি মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়।

বিগত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করা এবং সেই সরকারের অংশীদার হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে চলমান রাষ্ট্র সংস্কার সংলাপে জাতীয় পার্টিকে ডাকছে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ নিয়ে রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতারা।

এমন পরিস্থিতিতে ২ নভেম্বর ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশের ডাক দেয় জাতীয় পার্টি। এর প্রতিবাদে গত ৩১ অক্টোবর ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতা’ ব্যানারে একদল লোক জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেয়।

এরপর রাজধানীতে জাতীয় পার্টির গণসমাবেশ ঠেকাতে গণপ্রতিরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা’। এ অবস্থায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই এলাকায় আজ শনিবার সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর কর্মসূচি স্থগিত করে পিছু হটে জাতীয় পার্টি।

আরও পড়ুন: জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দিলো ছাত্র-জনতা

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর