রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ৭:৩৩ : অপরাহ্ণ
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড থেকে মুক্ত হওয়ার আড়াই মাস পর উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামী ৮ নভেম্বর লন্ডনে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
আজ মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য গণমাধ্যমকে জানান, খালেদা জিয়াকে প্রথমে লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডন নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর সেখানে থেকে তাকে তৃতীয় একটি দেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হবে। তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র দুই-একটি সেন্টার রয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সাথেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) শারীরিক সুস্থতার ওপর নির্ভর করে আমরা যাতে দ্রুত তাকে বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারি সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এরই অংশ হিসেবে আমরা লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার জন্য কাজ শুরু করেছি, যোগাযোগ চলছে। প্রথমে ম্যাডামকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে স্টে ওভারের পরে মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টার যে দেশে আছে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গত ৬ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দণ্ড মওকুফ করে মুক্তির আদেশ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ সংবাদ পান তিনি। মুক্তির পর দিনই ৭ আগস্ট নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশে ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। এক মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২১ আগস্ট গুলশানের বাসায় ফিরেন দুর্নীতির দুই মামলার দণ্ড থেকে মুক্তি পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন। মুক্তি পেলেও অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না। ২৪ ঘণ্টাই চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সাজা হয়। ওইদিনই তাকে পুরান ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। পরে একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার ৭ বছরের সাজা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে।
২৫ মাসের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা মহামারীর সময় মানবিক বিবেচনায় সরকারের নির্বাহী আদেশে দুই শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা ৬ মাস স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছিল, তিনি রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না এবং দেশেই চিকিৎসা নিতে হবে।
২০২১ সালের নভেম্বরে লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকে বিএনপি বারবার খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানালেও আওয়ামী লীগ সরকার তা নাকচ করে দেয়।
আরও পড়ুন: হাসিনার পালানোর দৃশ্য দেখে সেদিন যা বলেছিলেন খালেদা জিয়া