রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ অক্টোবর, ২০২৪ ৮:০৮ : অপরাহ্ণ
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভের মুখে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তাকে এক মুহূর্তের জন্যও প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। বিভিন্ন সময় ভারতে তার অবস্থান নিয়ে নানা খবর এসেছে। মাঝে তৃতীয় কোনো দেশে চলে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন ওঠে। তবে শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতেই অবস্থান করছেন। ভারতে তিনি এখন কোথায়, কীভাবে আছেন তা জানিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে দেশটির গণমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’।
আজ বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত দুই মাস ধরে নয়াদিল্লির লুটিয়েনস বাংলো জোনের একটি সেইফ হাউসে বসবাস করছেন।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, লুটিয়েন্স বাংলো এলাকাটিতে ভারতের মন্ত্রী, সিনিয়র এমপি ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত বাড়ির মতো একটিতে শেখ হাসিনাকে থাকতে দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রোটোকলসহ মাঝে মাঝে দিল্লির লোধি গার্ডেনে হাঁটাহাঁটি করেন। তার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
পলাতক হাসিনার গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার রক্ষার স্বার্থে দ্য প্রিন্ট বাড়িটির প্রকৃত ঠিকানা বা রাস্তার বিবরণ প্রকাশ করেনি।
সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তার জন্য যথাযথ প্রোটোকল মেনে শেখ হাসিনা মাঝে মধ্যে লোদি গার্ডেনে হাঁটেন। তার নিরাপত্তাব্যবস্থা খুবই কড়া। সাদা পোশাকে তাকে সার্বক্ষণিক পাহারা দেওয়া হচ্ছে।
একজন ‘গণ্যমান্য ব্যক্তি’ হিসেবে তিনি এই পর্যায়ের সুরক্ষা পাচ্ছেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে দ্য প্রিন্টকে। বলা হয়, দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি ওই এলাকায় বসবাস করছেন। এখানে তার থাকার জন্য সবকিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করার কয়েক ঘণ্টা পর একটি বিমানে হিন্ডন বিমানঘাঁটিতে নামেন শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ব্যক্তি। তবে দু’দিনের মধ্যেই তিনি বিমানঘাঁটি ত্যাগ করেন। বিমানঘাঁটিতে তার সঙ্গে দেখা করেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তারা।
তিনি বিমানঘাঁটিতে বেশিক্ষণ থাকতে পারতেন না। সেখানকার ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল না। তাই মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে তাকে একটি নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়। তারপর দিল্লির নিরাপদ ও সুরক্ষিত অঞ্চলে একটি বাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। এটি একটি উচ্চ সুরক্ষা অঞ্চল, যেখানে অনেক প্রাক্তন এবং কর্মরত ভারতের সংসদ সদস্যের বাড়ি রয়েছে।
শেখ হাসিনা প্রায়ই বাড়ির বাইরে যান কিনা জানতে চাইলে সূত্র বলেন, যখন প্রয়োজন হয় তখন কোর সিকিউরিটি গ্রুপকে জানানো হয় এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করা হয়।
এদিকে, জুলাই-আগস্টে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে হাজিরের নির্দেশও দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট একটি বিমানে করে ভারতের উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছান শেখ হাসিনা ও তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ। বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছানোর পরপরই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও দেশটির উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর দুদিন পর তাকে হিন্দন বিমান ঘাঁটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: শেখ পরিবারের সদস্যরা এখন কে কোথায়