বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪ | ৭ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৯ রবিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

মুজিবের মূর্তি ভেঙে ছেলেপেলে সঠিক কাজ করেছে: মাহমুদুর রহমান


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :২০ অক্টোবর, ২০২৪ ১০:৫১ : অপরাহ্ণ
আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর ছেলেপেলে শেখ মুজিবের মূর্তি ভেঙে দিয়ে সঠিক কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘ফ্যাসিবাদী বয়ান নির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা: একটি পর্যালচোনা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ডায়ালগ ফর ডেমোক্রেসি।

বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবের কোনো ভূমিকা ছিলো না। কারণ তিনি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই পাকিস্তানী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে ভারতে চলে গেছেন। তার পরিবারকেও পাকিস্তান সেনাবাহিনী দেখাশোনা করেছে। মুক্তিযুদ্ধে কোনো ভূমিকা শেখ মুজিবের আছে এটা ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে আমি মানতে রাজি না।’

আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক বলেন, ‘১৯৭২ সালে রাষ্ট্রীয় রক্ষীবাহিনী তৈরি করা হয়। তাদের মাধ্যমে গুম এবং বিচার বহির্ভূত হত্যা শুরু হয়। এসব আন্তর্জাতিক অপরাধ। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে প্রথম কারচুপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এটিও চালু করেছিলেন পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা। ১৯৭৩ সালে দু’টি ঘটনা ঘটেছে প্রথমটি হলো কারচুপির নির্বাচন আরেকটি হলো মুজিবকে দেবতার আসনে বসানো। শেখ মুজিবের অত্যন্ত বিতর্কিত একজন ভাগ্নে ছিলেন শেখ মনি। তার স্লোগান ছিলো আইনের শাসন নয় মুজিবের শাসন চাই।’

মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছেন। তখন একবেলা রুটি আর একবেলা ভাত খেতে হত। এই দুর্ভিক্ষ হয়েছে অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজ সরকারের কারণে। তখন চাল মজুদ করে ভারতে পাচার করা হত। ১৯৭৫ সালে তিনি গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের বীজ বপন করা হয়েছে। ফলে ২০০৯ থেকে ২০২৪ আমরা ফ্যাসিবাদের সরকার দেখেছি। এটি হলো বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের ইতিহাস।’

আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক বলেন, ‘গত ১৫ বছরে আমরা গণমাধ্যমেও মুজিব বন্দনা দেখেছি। মুজিবের অনেক বিশেষণ দেওয়া হয়েছে। সারাদেশে মুজিবের মূর্তিতে ভরে গেছে। বিপ্লবের পর ছেলেপেলে মুজিবের মূর্তি ভেঙে দিয়েছে, এটা সঠিক কাজ করেছে। আমার বয়স কম থাকলে, আমি উপস্থিত থাকলে, আমিও যোগদান করতাম।’

মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এখনকার বয়ান হচ্ছে, শেখ মুজিব ভালো শেখ হাসিনা খারাপ। ১৫ বছর সময় পেলে শেখ মুজিব শেখ হাসিনার থেকে ভয়ঙ্কর ফ্যাসিস্ট হতেন।’

 

আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের জন্য কয়েকটি বিষয়ের প্রয়োজন হয়, একটা বিষয় হলো কাল্ট তৈরি করা, পাবলিক এনিমি, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, নিয়ন্ত্রিত বিচার বিভাগ এবং ফ্যাসিবাদের পক্ষে বয়ান ও প্রচারণা। ৭২ সাল থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান এ কাজগুলো করেছে, পরে শেখ হাসিনাও করেছে।’

কাল্ট তৈরির কাজটা মিডিয়া করেছে দাবি করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ইসলামের প্রতি একটা বিদ্বেষ তৈরি করা হয়েছে, ডেমোনাইজ করা হয়েছে, ডেমোনাইজের যে কার্ডটা খেলা হয়েছে সেটা জঙ্গি কার্ড, ইসলামী জঙ্গি কার্ড। গ্রামের সব কৃষক দরিদ্র পরিবারের ছেলেদের ধরে এনে, তাদেরকে ডিবিতে আটকে রেখে, গুম করে, তাদের রেকর্ড দেখানো হতো না। তাদেরকে একটা বাড়িতে ট্রান্সফার করা হতো। যেমন- ঢাকা শহরের জাহাজবাড়ি। জাহাজবাড়িতে তাদের রেখে জঙ্গি আস্তানা বলে গণহত্যা চালানো হয়েছে। জাহাজবাড়ি কিছুই না, এটা সরকারের জঙ্গি কাজ, পুরোটাই জঙ্গি কাজের প্রচারণা। সমাজে ঘৃণার মাধ্যমে বিভাজন তৈরির কাজও মিডিয়া করেছে।’

ডায়ালগ ফর ডেমোক্রেসির আহ্বায়ক শেখ মো. আরমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি।

আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদেরের খোঁজ দিলে পুরস্কার দেবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর