রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ৮:০৯ : অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আছেন, নাকি অন্য দেশে চলে গেছেন, তা নিয়ে কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছে। বাংলাদেশের কোনো কোনো গণমাধ্যমে বলছে, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে গেছেন। আবার বলা হয়, ভারত সরকার তার ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ ইস্যু করেছে।
এমন নানান জল্পনার মাঝে অবশেষে শেখ হাসিনা অবস্থান সম্পর্কে জানালেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। বিষয়টি উঠে এসেছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক বৃহস্পতিবারের ব্রিফিংয়েও।
ব্রিফিংয়ে গৌতম লাহিরি নামে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এবং তাকে আগামী মাসের মধ্যে ট্রাইবুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান কী?
তিনি আরও জানতে চান, শেখ হাসিনা ভারতে আছেন নাকি অন্য দেশে চলে গেছেন তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। এছাড়া বাংলাদেশি বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর এসেছে যে, ভারত সরকার হাসিনাকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিয়েছে। শেখ হাসিনার বিষয়ে কি ভারতের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে? নাকি তিনি আগের স্ট্যাটাসেই এখানে অবস্থান করছেন?
এসব প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপত্তার কারণে এখানে এসেছেন এবং একই কারণে তিনি এখনো এখানেই আছেন।’
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৬০টির বেশি হত্যা ও গুমের অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ৫৪টিতেই মূল আসামি শেখ হাসিনা।
আজ দুপুরে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগ এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ মোট ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
‘বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে’ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজন ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
পরোয়ানা জারির পর এক সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই, তবে শেখ হাসিনা দিল্লিতেই আছে। তাকে ফেরত আনতে সরকার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। যেহেতু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক মাস সময় দিয়েছে।’
পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিষয়টি পুলিশের হাতে। নিশ্চয়ই পুলিশ তাকে ফেরাতে পারবে না। আমাদের কাছে বলবে। বলুক, তারপর আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি