শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আইন-আদালত

‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে বিগত সরকারের একাধিক প্রভাবশালী জড়িত’


সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ৫:২৪ : অপরাহ্ণ

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের আইনজীবী শিশির মনির।

আজ রোববার দুপুরে সুনামগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান।

শিশির মনির বলেন, ‘সাগর-রুনির মামলার নথি আমার কাছে এসেছে। মামলার নথিটি প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে দেখা যায়, এটি একটি সেনসিটিভ কেইস, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের একাধিক সেনসেটিভ মানুষ এর সঙ্গে জড়িত। সেনসেটিভ মানুষের নাম আসামি হিসেবে বিভিন্ন সময়ে এসেছে। এটি গোপনীয়, এখনও এটি চার্জশিট হয়নি, পাবলিক ডকুমেন্টস হয়নি। একজন দুজন মানুষ আছেন যারা স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। গোপনে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। একজন রাজসাক্ষী হতে চাচ্ছেন। গোপনীয়তা থাকায় সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।’

‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত’
সুনামগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির
এই আইনজীবী বলেন, ‘সরকার টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করেছে। এখানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি রয়েছেন, তাদের অনুসন্ধানের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সোমবার তাদের সঙ্গে আমার একটি মিটিং রয়েছে। এ ক্ষেত্রে একটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মামলার ১২ বছর চলে গেছে, যার অনেক তথ্য নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু ক্লু পাওয়া যাচ্ছে যার মূলকপি পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন সময়ে এটি নষ্ট হয়ে গেছে। যাই হোক, এগুলো এখনই বলা যাবে না তবে ভালো কিছু হবে এটা প্রত্যাশা।’

 

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি নিজেদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। তাদের একমাত্র ছেলে মাহির সারোয়ার মেঘ (৫) সেসময় বাড়িতে ছিল।
এ ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ আট জনকে আসামি করা হয়।

বাকি আসামিরা হলেন-বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ রুদ্র জামিনে আছেন। বাকিরা এখনো কারাগারে।

এ মামলার তদন্তে প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানার একজন এসআই নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু চার দিন পর ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ডিবি পুলিশ দুই মাসে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার যায় র‍্যাবের কাছে।

কিন্তু দীর্ঘ ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় ২০২১ সালের মার্চ মাসে র‌্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টে অগ্রগতির প্রতিবেদন দিয়ে বলেছিলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজন অপরিচিত ব্যক্তি জড়িত ছিল। সাগরের হাতে বাঁধা চাদর এবং রুনির টি-শার্টে ঐ দুই ব্যক্তির ডিএনএর প্রমাণ মিলেছে। অপরাধীদের শনাক্ত করতে ডিএনএ রিপোর্ট প্রস্তুতকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ল্যাবে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। প্রতিষ্ঠান দুটি ডিএনএর মাধ্যমে অপরাধীর ছবি বা অবয়ব প্রস্তুতের কাজ করে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত থেকে সরানো হলো র‌্যাবকে

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর