সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আজ বুধবার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে পাঠানো এক চিঠিতে এই প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, সীমান্ত হত্যাকাণ্ডকে ‘শূন্য পর্যায়ে’ নামিয়ে আনার জন্য ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বারবার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বিএসএফের এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এতে বাংলাদেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অযাচিত। এ ধরণের কর্মকাণ্ড দুই দেশের সীমান্ত কর্তৃপক্ষের জন্য ১৯৭৫ সালের যৌথ নির্দেশিকার বিধান লঙ্ঘন করে।
এ ছাড়া এ ধরনের জঘণ্য কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি বন্ধ ও এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে ভারত সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা ইউনিয়নের পাহাড়পুরের কাছে সীমান্তে কামাল হোসেনকে (৩২) গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। এই ঘটনার পর বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে বিএসএফ ওই যুবকের লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যায়।
এর আগে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার ঘটনায় ভারতকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। গত ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনে চিঠি পাঠিয়ে এ প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ১ সেপ্টেম্বর রাতে কুলাউড়া সীমান্ত দিয়ে মাকে নিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় অভিবাসী ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় ১৩ বছরের স্বর্ণা দাসকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ।
এ ঘটনায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কিশোরী স্বর্ণা দাসকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। চিঠির মাধ্যমে ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর পাশাপাশি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অযৌক্তিক।
ভারতের পেনাল কোড কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো আইনেই নিরস্ত্র নাগরিককে গুলি বা নির্যাতন করে মেরে ফেলার বিধান নেই। কেউ অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার করলে তাকে গ্রেপ্তার করে বিচার করা যেতে পারে। কিন্তু ভারত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে স্বীকৃত সব আন্তর্জাতিক ও দ্বিপক্ষীয় প্রটোকল অগ্রাহ্য করে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে।
স্বর্ণা দাস হত্যাকাণ্ড ১৯৭৫ সালে সীমান্ত নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় প্রটোকলের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে ঢাকা। বিজ্ঞপ্তিতে এ ধরনের জঘন্য হত্যাকাণ্ডের যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে দিল্লির প্রতি সীমান্তের সব হত্যাকাণ্ড তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা সীমান্তে যুবককে গুলি করে হত্যা, লাশও নিয়ে গেলো বিএসএফ