রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১১:৩৪ : অপরাহ্ণ
চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটির নবনিযুক্ত প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন চট্টগ্রাম সচেতন ব্যবসায়ী সমাজ নামক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর কোর্ট বিল্ডিং বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম সচেতন ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষে সভায় প্রতিনিধিত্ব করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক এস এম নুরুল হক। সভায় দৈনিক পূর্বকোণের প্রকাশক জসিম উদ্দিন চৌধুরী ও বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহসভাপতি এরশাদ উল্লাহসহ সংগঠনটির ২০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
সভায় চট্টগ্রাম সচেতন ব্যবসায়ী সমাজ নামের সংগঠনটির নেতৃবৃন্দরা প্রশাসকের কাছে তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। এগুলো হলো-প্রশাসকের মেয়াদ আরও দেড় মাস বাড়ানো, চেম্বারের সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ফারুককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া এবং নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে কোনো ব্যবসায়ীকে দায়িত্ব না দেওয়া।
এ তিনটি দাবির বিষয়ে চট্টগ্রাম সচেতন ব্যবসায়ী সমাজের আহ্বায়ক এস এম নুরুল হক রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ১২০ দিনের (৪ মাস) জন্য প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছিলো। পরে আমাদের দাবির মুখে প্রশাসকের মেয়াদ সম্প্রতি আরও ৯০ দিন (তিন মাস) বাড়ানো হয়েছে। ফলে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রশাসকের মেয়াদ থাকবে। মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫-২০ দিন আগে নির্বাচনের আয়োজন করতে হয়। কিন্তু ১ মার্চ থেকে রোজা শুরু হবে। রোজার মধ্যে কোনো অবস্থাতে আমাদের পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব না। আর রোজার আগে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে নতুন সদস্যদের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ভোটার হতে হবে। এটা ব্যবসায়ীদের জন্য কষ্টকর হবে। তাই আমরা প্রশাসকের মেয়াদ আরও দেড় মাস বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি।’
চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক এই সিনিয়র সহসভাপতি বলেন, ‘চেম্বারের সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ফারুকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাকে চেম্বার থেকে কর্মচারীরা বিতাড়িত করেছে। এ ছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফের ঘনিষ্ঠ লোক। তাকে চেম্বারের ভুয়া ভোটার বানানোর কারিগর বলা হয়। নির্বাচনের সময় তিনি নানা ম্যাকানিজম করতে পারেন। তিনি দায়িত্বে থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তাই তাকে অবিলম্বে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’
এস এম নুরুল হক বলেন, ‘আমরা নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে কোনো ব্যবসায়ীকে দায়িত্ব না দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। কারণ এতে বিতর্কের সৃষ্টি হবে। ব্যবসায়ীর পরিবর্তে নির্বাচন পরিচালনায় অভিজ্ঞ সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’
গত ৫ আগস্ট দেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর চট্টগ্রাম চেম্বার ঘিরে ব্যবসায়ীরা আন্দোলনে নামেন। চেম্বারে স্বেচ্ছাচারিতা ও পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার অভিযোগে নগরীর আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ করেন ব্যবসায়ীরা। এ পরিস্থিতিতে চাপে পড়ে গত ২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বারের বিনাভোটে নির্বাচিত সকল পরিচালক পদত্যাগ করেন।
এরপর গত ৯ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশাকে ১২০ দিনের (৪ মাস) জন্য চিটাগাং চেম্বারের প্রশাসক নিয়োগ দেয়। সম্প্রতি তার মেয়াদ আরও ৯০ দিন (৩ মাস) বাড়ানো হয়েছে। প্রশাসক নিয়োগের পর চট্টগ্রাম চেম্বারের নতুন নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। মাস খানেক পর নির্বাচন বোর্ড গঠন করা হতে পারে। ভোটের চার মাস আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম চেম্বারের ভোটের লড়াইয়ে নামতে পারেন আলোচিত ৫ ব্যবসায়ী