রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১১:০৯ : পূর্বাহ্ণ
রাজধানীর তেজগাঁও থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনিসহ ৭ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন।
অন্য আসামিরা হলেন-সাবেক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাংবাদিক দম্পতি সাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপা।
এর আগে, কোটা আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলায় গত ২৫ আগস্ট বিকেলে উত্তরার একটি বাসা থেকে ইনুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এ ছাড়া গত ২২ আগস্ট রাজধানীর বনানীর নিজ বাসভবন থেকে রাশেদ খান মেনন, ১৪ আগস্ট রাজধানীর খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে জুনায়েদ আহমেদ পলক, গত ১৯ আগস্ট রাজধানীর রাজধানীর বারিধারা এলাকা থেকে সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ২১ আগস্ট ঢাকা বিমানবন্দর থেকে শাকিল ও রুপা এবং ৩ সেপ্টেম্বর দিনগত রাতে ঢাকা থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাত্র ২২ দিনের বিক্ষোভে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের।
গত ৩ আগস্ট ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লাখো মানুষের সমাবেশে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে সরকার পতনের এক দফা দাবি ঘোষণা করা হয়।
পরদিন ৪ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে ছাত্র-জনতাকে প্রতিরোধ করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্র নিয়ে মাঠে নামে। এ দিন সারাদেশে ১৪ পুলিশ, শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতাকর্মীসহ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায়।
এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন ঘেরাও করতে ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেদিন রাস্তায় নেমে আসেন লাখো মানুষ। শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে পতন হয় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের।
ওই দিন বেলা আড়াইটার দিকে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে গণভবন থেকে হেলিকপ্টারে করে কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটিতে চলে যান। সেখান থেকে তারা বিমানবাহিনীর একটি বিমানে করে ভারতে পালিয়ে যান।
এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটে। শেখ হাসিনার পতনের পর লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে আনন্দ-উল্লাস করেন।
এরপর ছাত্র-জনতার দাবির মুখে গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর বদলে যেতে শুরু করে দেশের সার্বিক চিত্র।
হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলার বিভিন্ন কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া নেতাদের মারধর, হত্যা, বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটছে।
এ অবস্থায় আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগ নেতারা। কেউ কেউ দেশ ছেড়েছেন। অনেকে পালাতে গিয়ে বিমানবন্দর ও সীমান্তে আটক হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘আ.লীগ ক্ষমতায় আসবে এরকম ইতিহাস আর সৃষ্টি হবে না’