শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেপ্তার


পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১১:০৭ : পূর্বাহ্ণ

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাকে চট্টগ্রাম থেকে আটক করা হয়। আটকের পর তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ডিবি হেফাজতে নেওয়ার পর মশিউরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপি ডিবির যুগ্ম কমিশনার রবিউল হোসেন ভুঁইয়া জানান, মশিউরের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনসংশ্লিষ্ট আটটি হত্যা মামলা হয়েছে। এসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

ডিবি সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর নিউমার্কেট থানার একটি মামলায় মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে চাওয়া হবে।

মশিউর রহমান দীর্ঘ সময় ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের ডিবিতে কর্মরত ছিলেন। সবশেষ লালবাগ জোনের উপকমিশনার (ডিসি) ছিলেন তিনি। অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিও পেয়েছিলেন।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১৩ আগস্ট আরও ২৮ জনের পাশাপাশি মশিউরকেও চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়।

আলোচিত ডিবি কর্মকর্তা মশিউর ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম), ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও ২০১৯ সালে বাংলাদেশ পুলিশ পদক অর্জন করে। কর্মদক্ষতার কারণে তাকে চারবার ‘আইজিপি এক্সাম্প্লারী গুড সার্ভিসেস ব্যাচ’ দেওয়া হয়েছে। গত ২৯ জুন ২০২২-২৩ সালের জন্য তিনি শুদ্ধাচার পুরস্কারও পান।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাত্র ২২ দিনের বিক্ষোভে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের।

গত ৩ আগস্ট ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লাখো মানুষের সমাবেশে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে সরকার পতনের এক দফা দাবি ঘোষণা করা হয়।

পরদিন ৪ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে ছাত্র-জনতাকে প্রতিরোধ করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্র নিয়ে মাঠে নামে। এ দিন সারাদেশে ১৪ পুলিশ, শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতাকর্মীসহ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায়।

এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন ঘেরাও করতে ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেদিন রাস্তায় নেমে আসেন লাখো মানুষ। শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে পতন হয় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের।

 

ওই দিন বেলা আড়াইটার দিকে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে গণভবন থেকে হেলিকপ্টারে করে কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটিতে চলে যান। সেখান থেকে তারা বিমানবাহিনীর একটি বিমানে করে ভারতে পালিয়ে যান।

এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটে। শেখ হাসিনার পতনের পর লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে আনন্দ-উল্লাস করেন।

এরপর ছাত্র-জনতার দাবির মুখে গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর বদলে যেতে শুরু করে দেশের সার্বিক চিত্র।

হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলার বিভিন্ন কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া নেতাদের মারধর, হত্যা, বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটছে।

এ অবস্থায় আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগ নেতারা। কেউ কেউ দেশ ছেড়েছেন। অনেকে পালাতে গিয়ে বিমানবন্দর ও সীমান্তে আটক হয়েছেন।

আরও পড়ুন: হাসিনার পালানোর দৃশ্য দেখে সেদিন যা বলেছিলেন খালেদা জিয়া

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর