রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ৯:০৯ : পূর্বাহ্ণ
আজ ১২ রবিউল আউয়াল। ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী ও রাসূল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত।
‘ঈদ’ শব্দটি আরবি। এর আভিধানিক অর্থ আনন্দ উদযাপন করা। আর ‘মিলাদ’ শব্দের শাব্দিক অর্থ জন্মদিন। আর নবী অর্থ ঐশী বার্তাবাহক। তাই ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ বলতে মূলত রাসুলের (সা.) আগমন উপলক্ষে আনন্দ উদযাপন করাকে বোঝায়।
হিজরি ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। পরে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন।
একসময় গোটা আরব অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা। এ যুগকে বলা হতো আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকার যুগ।
তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল এবং মূর্তিপূজা করতো। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহতাআলা রাসুলুল্লাহকে (সা.) দুনিয়ায় প্রেরণ করেন।
মহানবী (সা.) অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। পঁচিশ বছর বয়সে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিবি খাদিজা নামের এক ধর্ণাঢ্য মহিলার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নব্যুয়ত প্রাপ্ত হন। আল্লাহতাআলার নৈকট্য লাভ করেন।
৪০ বছর বয়সে নবুয়তপ্রাপ্ত হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআন মাজিদে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ১০৭)
হজরত আবু কাতাদা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে সোমবার দিন রোজা পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি উত্তরে বললেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে।’ (সহীহ মুসলিম, হাদিস নম্বর-১১৬২)
এসব কারণে এবং তৎকালীন আরব জাহানের বাস্তবতায় এই দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে উদযাপন করে থাকে।
বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় ছুটি। যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আলাদা বাণী দিয়েছেন। এসব বাণীতে তারা মহানবী (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করে ভ্রাতৃত্ববোধ চর্চা ও মানবকল্যাণে কাজ করার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের জন্য বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জশনে জুলুস, মহানবীর (সা.) ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন জশনে জুলুস বের করবে।
এদিকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। আজ বাদ মাগরিব বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব গেইটে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন।
আরও পড়ুন: হাদীসের নামে জালিয়াতি, প্রচলিত ১০ জাল হাদিস সম্পর্কে জেনে নিন