শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা অর্থ-বাণিজ্য

বিদেশে যাওয়া নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম


এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। ফাইল ছবি

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ৪:০৯ : অপরাহ্ণ

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজনীতি সংবাদ অনলাইন নিউজ পোর্টালে ‘গোপনে দেশ ছেড়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।

সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাহবুবুল আলম আজ রোববার ই-মেইলের মাধ্যমে রাজনীতি সংবাদের কাছে প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা পাঠিয়েছেন। তার লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

গত ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে আমি ব্যাংকক এসেছি চিকিৎসার জন্য, এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। এখন আমি সিঙ্গাপুরে এসে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। আমি কোলনিক পলিপে আক্রান্ত। এটি অপসারণের জন্য কোলনস্কোপি পরীক্ষা করেছি। কিন্তু আমাকে এখানে অন্তত ১ মাস চিকিৎসকের ফলোআপে থাকতে হবে। সুস্থ হলে আমি দেশে ফিরে যাবো।

আমি বিদেশে চলে আসাতে গত ৪ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠকে অংশ নিতে পারিনি। কিন্তু এর আগে গত ২০ আগস্ট আমি এফবিসিসিআই সভাপতি হিসেবে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়েছি। এ ছাড়া ২২ আগস্ট আর্মি হেডকোয়ার্টারে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি।

এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ আমার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছে। গত এক বছর ধরে আমি সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে এফবিসিসিআই সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছি। এ পর্যন্ত পরিচালনা পর্ষদের কোনো পরিচালক আমার নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেননি।

গত ২৪ আগস্ট এফবিসিসিআই কার্যালয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় পর্ষদের ৮০ জন পরিচালকের মধ্যে ৬০ জন উপস্থিত ছিলেন। সভায় সব পরিচালক বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে মত দেন। সভায় কোনো পরিচালক পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগের কথা বলেননি।

সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ী সমাজের বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে কোনো অভিযোগ উঠেনি। কাজেই এখন যারা এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগের দাবি করছেন তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অগ্রহণযোগ্য ও দুরভিসন্ধিমূলক।

ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফরম এফবিসিসিআই। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধনের লক্ষে সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে ব্যবসায়ী সমাজ। দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে হলে সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বোঝাপড়া থাকতে হবে। এফবিসিসিআই সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করে। বাস্তবতা হলো, যে সরকারই ক্ষমতায় আসে ব্যবসায়ী সমাজকে সেই সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হয়। আর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের ভুল-ত্রুটি থাকতেই পারে। কারণ আমরা কেউ ভুলের উর্ধ্বে নয়।

 

তবে এফবিসিসিআইয়ের কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিপক্ষও না। রাজনীতি যার যার, অর্থনীতি সবার। ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতির প্রাণ। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ও দেশকে সমৃদ্ধ করতে ভেদাভেদ ভুলে ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

ব্যবসায়ী সমাজের কাছে আমার আহ্বান, দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের এই সময়ে নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি না করে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে সহযোগিতা করি। কারণ ব্যবসায়ী সমাজ যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকে, তাহলে দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে যাবে। সরকারের সহযোগিতা নিয়ে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় কাজ করতে চায় এফবিসিসিআই।

রাজনীতি সংবাদের প্রতিবেদনে একটি অংশে উল্লেখ করা হয়েছে, চট্টগ্রাম চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ হলে আমার এফবিসিসিআইয়ের সভাপতির পদ স্থগিত হয়ে যাবে।

বাণিজ্য সংগঠন আইন-২০২২ এর ১৭ ধারার ৪ নম্বর উপ-ধারায় উল্লেখ আছে-কোনো বাণিজ্য সংগঠনের প্রশাসক নিযুক্ত থাকাকালীন উক্ত সংগঠনের কোনো সদস্য ফেডারেশনের নির্বাচনে প্রার্থী বা ভোটার হইতে পারিবেন না এবং ফেডারেশনের সাধারণ পরিষদে উক্ত সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব স্থগিত থাকিবে।

কিন্তু আইনের এই ধারা অনুযায়ী, এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ পরিষদে আমার সদস্য পদ স্থগিত হবে না। এর কারণ হলো, ধারাটা ফেডারেশনের কেবল নির্বাচনকালীন সময়ে প্রযোজ্য হবে। কিন্তু এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন হবে এক বছর পর। আর ফেডারেশনের সাধারণ পরিষদের সদস্যদের মেয়াদ হলো দুই বছর। কাজেই চট্টগ্রাম চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ হলেও এফবিসিসিআইয়ে আমার সভাপতির পদ স্থগিত করার সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন: গোপনে দেশ ছেড়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর