রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ৩:০৪ : অপরাহ্ণ
পদত্যাগের পর নির্বাচন ভবন ছাড়ার সময় কমিশনারদের ধাওয়া দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় দুই নির্বাচন কমিশনারের গাড়িতে জুতা নিক্ষেপও করেন তারা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে আজ দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ কমিশনার পদত্যাগ করেন।
কমিশনারদের পদত্যাগকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল। আইডিকার্ড ছাড়া ভিতরে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এ সময় বাইরে অবস্থান করা বিক্ষুব্ধ জনতা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। পদত্যাগ করে কমিশনাররা বাইরে বের হওয়ার পর তাদের ধাওয়া দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় সদ্য পদত্যাগকারী নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা ও মো. আনিছুর রহমানের গাড়িতে জুতা নিক্ষেপ করেন তারা।
জানা গেছে, পদত্যাগের আগে দুপুর ১২টায় লিখিত বক্তব্য শুরু করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় দুজন কমিশনার সঙ্গে থাকলেও বাকি দুজন নিজেদের রুমেই অবস্থান করেন। শেষ কর্মদিবসের সংবাদ সম্মেলনকে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘সৌজন্য বিনিময়’ হিসেবে অভিহিত করে সাবেক নির্বাচন কমিশনার। যদিও লিখিত বক্তব্য শেষে গণমাধ্যমের সামনেই পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন তিনি। বক্তব্য শেষে কোনো প্রশ্নের সুযোগ না দিয়ে চলে যান কাজী হাবিবুল আউয়াল।
একযোগে নির্বাচন কমিশনারদের এমন পদত্যাগ দেশের ইতিহাসে আর হয়নি। পদত্যাগের পরপরই নির্বাচন ভবন ত্যাগ করেন তারা।
ছাত্রজনতার গণ-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়। এরপর থেকে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের পদত্যাগের দাবি ওঠে। নির্বাচন কমিশনের সদস্যরাও মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের পদ ছাড়তেই হবে। তাই পদত্যাগের জন্য তারা মানসিক প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিলেন।
তবে নিজেরাই পদত্যাগ করবেন, নাকি এ নিয়ে সরকারের কোনো পরিকল্পনা আছে তা বোঝার চেষ্টায় ছিলেন এতোদিন। এ বিষয়ে পরামর্শের জন্য নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা রাষ্ট্রপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সফল হননি বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় আজ সংবাদ সম্মেলন ডেকে পদত্যাগ করেছেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ নেয় কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন। এই কমিশনের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর। এই নির্বাচন কমিশন গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সমালোচিত হয়েছে। নির্বাচন বর্জন করেছিলো বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। শুধু আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র দলগুলো ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: অবশেষে আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ