রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১১:৫৩ : পূর্বাহ্ণ
মানহানির পাঁচ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে খালাস দিয়েছেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত চারটি এবং অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত একটি মামলায় খালাসের আদেশ দেন।
পাঁচটি মানহানির মামলার মধ্যে চারটি মামলা করেছিলেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। আর একটি মামলা করেছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম।
আজ মামলাগুলো শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারিত ছিল। তবে মামলার বাদীরা আদালতে হাজির হননি। চারটি মামলার বাদী এবি সিদ্দিক মারা গেছেন।
এ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে মামলা থেকে খালাস দেওয়ার আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। পরে আদালত তাকে মামলাগুলো থেকে খালাস দেন।
‘ভুয়া জন্মদিন পালনের’ অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম এ মামলা করেছিলেন।
এরপর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একে একে চারটি মানহানির মামলা করেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী।
২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে মানহানিকর মন্তব্যের অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করেন তিনি।
এরপর ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর যুদ্ধাপরাধীদের মদদের অভিযোগে এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি চতুর্থ মামলাটি দায়ের করেন এবি সিদ্দিকী।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ওই বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর।
এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখনও পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন। এ ছাড়া বিএনপি প্রধানের বিরুদ্ধে মানহানিসহ আরও অনেক মামলা হয়।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। ওই বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন খালেদা। তখন থেকে তিনি সেখানেই আছেন।
এরপর থেকে পরিবারের আবেদনে প্রতি ছয় মাস পরপর বিএনপি নেত্রীর মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে আসছিল শেখ হাসিনার সরকার। প্রতিবারই তাকে দুটি শর্ত দেওয়া হচ্ছিল। তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস ও হৃদরোগে ভুগছেন। সাময়িক মুক্তির পর তাকে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য পরিবারের তরফ থেকে বেশ কয়েকবার আবেদন করা হলেও ওই শর্তের যুক্তি দিয়েই বার বার তা প্রত্যাখ্যান করেছে শেখ হাসিনার সরকার।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০২০ সাল থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্ত থাকলেও গণআন্দোলনে সরকার পতনের পর সাজা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পান তিনি।
আরও পড়ুন: হত্যার পর লাশ পোড়ানোর ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা আটক