রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৩১ ভাদ্র, ১৪৩১ | ১১ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

হত্যার পর লাশ পোড়ানোর ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা আটক


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১১:২৯ : অপরাহ্ণ
ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফী। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় ৭ শিক্ষার্থীকে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর অভিযোগে ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আজ সোমবার তার পালিয়ে যাওয়ার খবর পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দিনভর চেষ্টার পর রাত ১০টার দিকে তাকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের ঢাকা জেলা উত্তরের ওসি রিয়াজ উদ্দিন বিপ্লব এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপনসূত্রে আব্দুল্লাহিল কাফির পালিয়ে যাওয়ার খবর পায় ডিবি পুলিশ। এরপর দিনভর নানা নাটকীয়তার পর ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করতে সমর্থ হয় ডিবির একটি দল।

কাফির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, তিনি গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্রজনতাকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগে অভিযুক্ত।

এর আগে গত ৩০ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়।

ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন পুলিশ সদস্য একজন হাত ও একজন পা ধরে লাশ ভ্যানে নিক্ষেপ করছেন। এরপর ভ্যানে লাশের স্তূপ করে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন তারা। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা মেলে।

ভিডিওর ১ মিনিট ৬ সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার পাশে।

মহাসড়ক থেকে থানার দিকে অগ্রসর হয়ে এসবি অফিসের দিকে চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রকাশ হওয়া ভিডিওটি আশুলিয়া থানার সামনের ভবনের দ্বিতীয়তলা থেকে ধারণ করা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি ড্রোন উড়িয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। তবে সেটি পুলিশের ড্রোন কি না তা জানি না। থানার বিভিন্ন গলিতে ছাত্র-জনতা প্রবেশ করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পুলিশ। এ সময় সাতজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে পুলিশ লাশগুলো থানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পুলিশভ্যানে লাশগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

 

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা সেদিন ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফীর নির্দেশনা পালন করেছি।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারীরা গত ৫ আগস্ট ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায় জমায়েত হতে থাকেন। পরে শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের খবরে আন্দোলনকারীরা আশুলিয়া থানার দিকে অগ্রসর হয়। এসময় আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ১৫ জনের মৃত্যু হয় (ভ্যানে তোলা লাশের হিসাব বাদে)।

জানা গেছে, সাভার ও আশুলিয়ায় গত ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন ৭৫ জন। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন সাড়ে ৪ শতাধিক মানুষ। যাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।

আরও পড়ুন: পিকআপ ভ্যানে ৭ শিক্ষার্থীর লাশ তুলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলে পুলিশ!

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর