বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

এস আলমের বিলাসবহুল গাড়ি সরানোর ঘটনায় ৩ বিএনপি নেতাকে শোকজ


গত ২৯ আগস্ট রাতে কালুরঘাট শিল্প এলাকার মীর গ্রুপের ওয়্যারহাউস থেকে এস আলমের ১৪ বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়।

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :৩১ আগস্ট, ২০২৪ ৭:৩২ : অপরাহ্ণ

এস আলম গ্রুপের ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নিতে সহায়তার অভিযোগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার তিন নেতাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

নোটিশ পাওয়া বিএনপির এই নেতারা হলেন-চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম এবং কর্ণফুলী থানা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিয়া।

বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি নেতাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

গত ২৯ আগস্ট রাতে কালুরঘাট শিল্প এলাকার (বিসিক) মীর গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ওয়্যারহাউস থেকে একে একে ১৪ বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও অডি, পোরশে ও রেঞ্জরোভার ইত্যাদি।

জানা গেছে, নগরের একটি ওয়্যারহাউস থেকে দক্ষিণ জেলা বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন মডেলের দামি গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই সময় চালকদের একটি টিম কালুরঘাট শিল্প এলাকার মীর গ্রুপের মালিকানাধীন ওয়্যারহাউসে যান। তাদের ব্যাকআপ দিতে কয়েকটি গাড়ি সেখানে পৌঁছায়। গাড়িগুলো থেকে নামেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অহিদুল আলম চৌধুরী পিবলু এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ হোসেন নয়ন। একটি গাড়ি থেকে নামেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের ড্রাইভার মনসুর। সেই গাড়ির ভেতরে আবু সুফিয়ান বসে ছিলেন বলে বলে ধারণা প্রত্যক্ষদর্শীদের। এস আলম গ্রুপের গাড়ি নিরাপদে বের হয়ে যাওয়ার পর বিএনপি নেতারা ঘটনাস্থল থেকে সরে যান।

গাড়িগুলোতে কী ছিল সেটি জানা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শী কারও কারও ধারণা, এগুলোতে বিপুল পরিমাণ টাকা ছিল। বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণের নামে এস আলম গ্রুপের টাকা লুটপাট নিয়ে সমালোচনা চলছে। এমন সময় গ্রুপটির মালিক ও তাদের স্বজনদের ব্যবহৃত গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার কাজে বিএনপি শীর্ষ নেতাদের সশরীরে উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর দক্ষিণ জেলা বিএনপি আজ শনিবার দুপুর ২টার দিকে নগরের দোস্ত বিল্ডিং নিজস্ব কার্যালয়ে একটি সম্মেলন করে। এতে অভিযুক্ত বিএনপি নেতারা এস আলমের গাড়ি সরিয়ে নিতে সহায়তার অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।

এর আগে, গত ২৮ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‌গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এস আলম গ্রুপের জ‌মি ও সম্পদ না কেনার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এস আলম গ্রু‌প এবং তা‌দের স্বার্থসং‌শ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক-লেনদেন ও ঋণ স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন প্রতিষ্ঠান‌টি নামে-বেনামে থাকা বি‌ভিন্ন জ‌মি ও সম্পদ বি‌ক্রি করার চেষ্টা করছে। এগুলো ঠেকাতে আইনি প্রক্রিয়া দরকার।

ড. মনসুর বলেন, এস আলম বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি যিনি পরিকল্পিতভাবে ব্যাংক লুট করেছেন। এভাবে পৃথিবীতে কেউ ব্যাংক ডাকাতি করেছে কি না জানা নেই। এখন এস আলমের নামে-বেনামে থাকা সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। তাই এই মুহূর্তে এস আলমের সম্পদ যেন কেউ না কেনেন।

আরও পড়ুন: 

এস আলমের বিরুদ্ধে ১ লাখ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ, তদন্তে সিআইডি

৬ ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ ও সহযোগীদের ঋণ ৯৫ হাজার কোটি টাকা

‘পৃথিবীতে এস আলমের মতো কেউ ব্যাংক ডাকাতি করেনি’

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর