রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট ২০২৪, ৬:১০ অপরাহ্ণ
এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম (এস আলম) মাসুদ ও তার সহযোগী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগগে তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি।
আজ শনিবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম এই তদন্ত শুরু করেছে।
বিকেলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সিআইডি প্রায় এক লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের বিষয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।
সিআইডি থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, এস আলমসহ সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে মাত্র একদিনের ব্যবধানে বাংলাদেশেই পারমানেন্ট রেসিডেন্স (পিআর) গ্রহণ করেছেন এবং সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ও সাইপ্রাসসহ ইউরোপে বাংলাদেশ হতে অর্থপাচার করে নিজ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রয় ও ব্যবসা পরিচালনা করেছেন।
পাচারকৃত অর্থে সিঙ্গাপুরে প্রায় ২৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের ‘ক্যানালি লজিস্টিক প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ ছাড়া, ভুয়া নথি তৈরি, জাল জালিয়াতি এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিদেশে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ও বিনিয়োগের নিমিত্তে নামে-বেনামে ছয়টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে বিদেশে পাচার করেছেন।
বিদেশে শেল কোম্পানি (নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান) খুলে অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে বিদেশে পাচার করেছেন।
এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলমসহ তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় সংঘবদ্ধভাবে মানিলন্ডারিং অপরাধ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। এই বিষয়ে মানিলন্ডারিং আইন ও বিধি অনুযায়ী সিআইডি অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।
সিআইডি ইতিমধ্যে এস আলমের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে তথ্য চেয়েছে। সেই তথ্য পাওয়ার পর কোন কোন দেশে অর্থ পাচার করেছে, সেই দেশ শনাক্ত করে সেসব দেশে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, এস আলম গ্রুপের শীর্ষ কর্তারা আত্মগোপনে রয়েছেন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এস আলমের সম্পদ কাউকে না কেনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে কিছু কিছু এলাকায় এস আলমের কারখানায় লুটের ঘটনা ঘটেছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইমের প্রধান ডিআইজি কুসুম দেওয়ান জানান, কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অর্থ পাচার অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, প্রতিটি ঘটনাই তদন্ত করা হবে।
আরও পড়ুন:
৬ ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ ও সহযোগীদের ঋণ ৯৫ হাজার কোটি টাকা
‘পৃথিবীতে এস আলমের মতো কেউ ব্যাংক ডাকাতি করেনি’