রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩০ আগস্ট, ২০২৪ ৭:০৪ : অপরাহ্ণ
সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উত্তর জোনের দুই-তিনজন কর্মকর্তা সীমান্ত পার করে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর গুলশান সোসাইটির নির্বাহী কমিটির সদস্য আরাফাত আশওয়াদ ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন।
আরাফাত আশওয়াদ ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনের সময় মোহাম্মদ এ আরাফাত একের পর এক বাজে মন্তব্য করেছেন। শহীদ আবু সাইদ ও শহীদদের মাদকসেবী বলেছেন। গুলি শেষ হবে না বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে উস্কে দিয়েছেন। যার ফলে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে।’
গুলশান সোসাইটির নির্বাহী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘দেশে ইন্টারনেট শাটডাউনের সিদ্ধান্ত এসেছে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের কাছ থেকে। এই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন পলক আর সিদ্ধান্ত দেন আরাফাত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তিনি। এতেই বুঝা যায় এ আন্দোলনে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরাফাতের একটি পার্সোনাল ইন্টারেস্ট ছিল।’
আরাফাত আশওয়াদ বলেন, ‘কোনো আইন না মেনে শুধু একটি মেসেজ দিয়ে দুটি টেলিভিশন পনের মিনিটের জন্য বন্ধ করেছিলেন আরাফাত। ওনি বারবার হুমকি দিতেন কিছু হলেই বন্ধ করে দেবে। শুধু মিডিয়া নয়, ফেসবুকের মেটাকেও ওনি বন্ধের হুমকি দিতেন।’
এর আগে গত ২৭ আগস্ট আরাফাতকে আটক করা হয়েছে বলে একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দায়িত্বশীল কেউ এর সত্যতা নিশ্চিত করেননি। ফলে আটকের বিষয়টি নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসন থেকে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত। পরে তিনি শেখ হাসিনার নতুন মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
আরাফাত দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের একজন থিংক ট্যাঙ্ক হিসেবে কাজ করছেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন তিনি। এরপর থেকে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ে কাজ শুরু করেন। চিত্রনায়ক ফারুক মারা গেলে ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান আরাফাত। ২০২৩ সালের অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে হিরো আলমকে হারিয়ে সংসদ সদস্য হন তিনি।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। কেউ কেউ দেশ ছাড়তে পারলেও অনেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছেন।
হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর গত ১৩ আগস্ট সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর একে একে সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহ্মেদ পলক, ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, ১৪-দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং সাবেক এমপি সাদেক খান গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের সামনে যে ৩টি পথ খোলা