রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, প্রকাশের সময় :২৪ আগস্ট, ২০২৪ ৫:৩১ : অপরাহ্ণ
সিলেটে আদালত প্রাঙ্গণে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ওপর ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করেছে উত্তেজিত জনতা।
আজ শনিবার বিকেল ৪টার সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আলমগীর হোসেনের আদালতে তোলার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নানা কারণে বিতর্কিত ও সমালোচিত অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতিকে কয়েকজন লোক মারতে উদ্যত হয়। পরে কঠোর নিরাপত্তায় তাকে আদালতে নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।
এর আগে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যায়।
এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে অবৈধভাবে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক বিচারপতি মানিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরে সিলেটের কানাইঘাট দনা সীমান্ত বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করায় সাবেক বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে নোয়াখালীর আদালতে মামলা করা হয়েছে।
গত ১৯ আগস্ট জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসান পলাশ বাদী হয়ে নোয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অবসরে যান।
সাবেক এই বিচারপতি আওয়ামী লীগ সরকারের ঘোর সমর্থক ছিলেন। সরকারের কার্যক্রম সমর্থন করে টকশোতে আলোচনা করতেন।
কোটা আন্দোলন ইস্যুতে সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে আয়োজিত টকশোতে আলোচক হিসেবে হিসেবে অংশ নেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। কিন্তু আলোচনার একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে সঞ্চালক দীপ্তি চৌধুরীর ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। পুরো অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার উপস্থাপিকার ওপর নিজের ক্ষোভ ঝাড়েন এবং উচ্চবাচ্য করেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি অনুষ্ঠান শেষে স্টুডিও ছাড়ার আগে উপস্থাপিকাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যা দেন। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
পরে উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরীকে রাজাকারের বাচ্চা বলে সম্বোধন ও অশালীন আচরণের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন সাবেক বিচারপতি মানিক। একই সঙ্গে তিনি জনগণের কাছেও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। গত ১২ আগস্ট তাকে (বিচারপতি মানিক) লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজের কাছে লিখিতভাবে এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সীমান্ত দিয়ে পালাতে গিয়ে বিজিবির হাতে ধরা সাবেক বিচারপতি মানিক