হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছে আদালত।
রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয় রাশেদ খান মেননকে। আজ শুক্রবার বিকেল তিনটার দিকে তাকে আদালতে আনা হয়।
এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে নিউমার্কেট থানার পুলিশ।
রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানিতে ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আন্দোলনের সময় গণভবনে ১৪ দলের নেতা হিসেবে রাশেদ খান মেনন, ইনুরা ছিলেন। তারা সেখানে যেকোনোভাবে এই আন্দোলন ঠেকানোর কথাও বলেছেন। তারা স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে আন্দোলন প্রতিহত করতে বক্তব্য দিয়ে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন।
অন্যদিকে মেননের পক্ষের আইনজীবী বলেন, আসামি অসুস্থ। তাকে রিমান্ডে না নিয়ে জামিন দেন। তার চিকিৎসা দরকার।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দারের আদালত রাশেদ খান মেননের ৫ দিনের রিমান্ডে মঞ্জুর করেন।
রাশেদ খান মেননকে আদালত চত্বরে নেওয়ার সময় সেখানে সেনাসদস্য, বিজিবি সদস্য ও বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিলেন। এ সময় বেশ কিছু আইনজীবীকে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি। আওয়ামী লীগ আমলে তিনি প্রথমে বেসরকারি বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী এবং পরে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় সম্প্রতি কয়েকটি মামলায় মেননকে আসামি করা হয়েছে।
২০০৮ সাল থেকে টানা তিন দফায় ঢাকা-৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন রাশেদ খান মেনন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ আসনে (উজিরপুর-বানারীপাড়া) নির্বাচিত হন মেনন।
রাশেদ খান মেননের জন্ম ১৮ মে ১৯৪৩ সালে। তার পৈতৃক নিবাস বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৪ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন।
১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নেতৃত্বে আসেন মেনন। রাজনৈতিক কারণে তাকে বারবার জেলে যেতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল তাকে। এমএ পাস করেছেন জেলখানায় বসে পরীক্ষা দিয়ে।
আরও পড়ুন: এস আলম ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা